নার্সদের যোগ্যতা নিয়েও উঠল প্রশ্ন

শহরের কয়েকটি নার্সিংহোমেও ভুয়ো চিকিৎসক রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সব নার্সিংহোমের সঙ্গে মেয়র এবং পুরবোর্ডের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলে দাবি করেন তোলেন তৃণমূলের কাউন্সিলররা। পুরসভার অনুষ্ঠানেও সেই সব অভিযুক্তদের দেখা গিয়েছে বলে তারা অভিযোগ তোলেন।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ০১:৪১
Share:

ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে দোষারোপ শোনা গেল শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিঙে। শুধু ভুয়ো চিকিৎসক নয়, পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যে নার্সরা কাজ কেন তাঁদের একাংশের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এ দিন।

Advertisement

দীর্ঘ দিন ধরে শিলিগুড়ির পুরসভার মাতৃসদন এবং অন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজ করা তিন চিকিৎসকের শংসাপত্র ভুয়ো বলে জানতে পারে স্বাস্থ্য দফতর। ওই তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠিও পাঠায় পুরসভা। তিন চিকিৎসকের মধ্যে দু’জনের নিয়োগ হয়েছিল ২০১৪ সালে অন্য একজন ২০০৩ সালে। এ দিন বোর্ড মিটিঙে বিরোধীরা প্রশ্ন করেন, জাল সংশাপত্রে এতদিন ধরে কী ভাবে চাকরি করলেন ওই ভুয়ো চিকিৎসকরা। মেয়র পাল্টা দাবি করেন, রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়াতেই এই হাল। তা নিয়ে তুমুল বাকবিতণ্ডা শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের। শহরের কয়েকটি নার্সিংহোমেও ভুয়ো চিকিৎসক রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সব নার্সিংহোমের সঙ্গে মেয়র এবং পুরবোর্ডের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলে দাবি করেন তোলেন তৃণমূলের কাউন্সিলররা। পুরসভার অনুষ্ঠানেও সেই সব অভিযুক্তদের দেখা গিয়েছে বলে তারা অভিযোগ তোলেন।

মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মাতৃসদনের যে চিকিৎসকদের নিয়ে বির্তক হয়েছে তাদের নিয়োগ অনেক আগেই হয়েছিল। সে সময়ে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ছিলেন। আমরা অভিযোগ পেয়েই জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি।’’ ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে বিরোধী তৃণমূল কাউন্সিলরদের কটাক্ষও করেছেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘এমন নয় যে রাজ্যের তৎপরতায় একের পর এক ভুয়ো চিকিৎসক ধরা পড়েছে। সংবাদমাধ্যম থেকেই সকলে বিষয়টি জানতে পারে। এ তো রাজ্যের ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উদাহরণ।’’

Advertisement

বিরোধী কাউন্সিলর কৃষ্ণ পালের অভিযোগ, ‘‘পুরসভার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এতদিন ধরে ভুয়ো চিকিৎসক কী ভাবে কাজ করল তাই আশ্চর্যের। আরও অনেক ভুয়ো চিকিৎসক, নার্স রয়েছে। পুরসভা জেনেও পদক্ষেপ করছে না।’’

নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা প্রসঙ্গে তৃণমূল কাউন্সিলর তথা বোরো চেয়ারম্যান রঞ্জন শীলশর্মা মেয়রকে বলেন, ‘‘ভুয়ো চিকিৎসক জেনেও পুলিশকে পুরসভা কিছুই জানাননি। আপনাদের সঙ্গে তো অনেক চিকিৎসকের ঘনিষ্ঠতা দেখেছি, যারা ভুয়ো বলে অভিযোগ।’’ নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও পুরসভা উদাসীন বলে অভিযোগ করেছেন বাম বোর্ডের স্বাস্থ্য বিষয়ক মেয়র পরিষদ সদস্য দুর্গা সিংহ। তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলরের অভিযোগ, ‘‘যখন মেয়র পরিষদ ছিলাম তখন আমি একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু এই বোর্ড কিছুই করেনি।’’ যদিও মেয়র জানিয়ে দিয়েছেন, নার্সিংহোম নিয়ে পুরসভার করণীয় কিছু নেই। যা করার স্বাস্থ্য দফতরকেই করতে হবে বলে দাবি মেয়রের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন