চলছে অবরোধ। বুনিয়াদপুরে আটকে পড়েছে ট্রেন। নিজস্ব চিত্র
বিহারে দিশম পার্টির রেল অবরোধের জেরে সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন থাকল উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ। ঘন কুয়াশা এবং কনকনে ঠান্ডায় বিভিন্ন স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকল অন্তত দশ জোড়া এক্সপ্রেস সহ অসংখ্য প্যাসেঞ্জার ট্রেন। অন্য দিকে মালদহের একাধিক জাতীয় ও রাজ্য সড়কও অবরোধ করে রাখায় জেলার একাংশ তো বটেই, এমনকী উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
এ দিন সকাল আটটা থেকে থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত ৩৪, ৮১ ও ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে কোনও যানবাহনই চলাচল করেনি। পাশাপাশি মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কে অবরোধ থাকায় সেই রুটেও কোনও যানবাহন চলাচল করেনি। ফলে সমস্ত রুটের যাত্রীরাই এ দিন বিপাকে পড়েন। বিকেল তিনটের পর অবরোধ উঠলেও এ দিন বেশিরভাগ রুটে বেসরকারি বাস পরিষেবা বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ অব্যাহত ছিল। ছোট পিকআপভ্যান, ম্যাজিক গাড়ি করে মানুষকে যাতায়াত করতে হয়েছে।
অবরোধ: বুলবুলচণ্ডীতে মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কে। নিজস্ব চিত্র
জমি অধিগ্রহণ বিল ও ধর্মান্তরণ বিল প্রত্যাহারের দাবিতে এ দিন সকাল ছ’টা থেকে ডালখোলা সহ বিহারের একাধিক স্টেশনে রেল অবরোধ শুরু করে ঝাড়খন্ড দিশম পার্টি। চলে সড়ক অবরোধও। তার জেরেই খুরিয়াল স্টেশে দাঁড়িয়ে পড়ে এনজেপিমুখি দার্জিলিং মেল। কাঞ্চনকন্যা আজমনগরে এবং পদাতিক ওল্ড মালদহ স্টেশনে দাঁড়িয়ে যায়। কাটিহার স্টেশনে সকাল থেকে আটকে পড়ে রাজধানী এক্সপ্রেস এবং ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস। চেন্নাই এগমোর এক্সপ্রেস কিসানগঞ্জে, কামাখ্যা-পুরী এক্সপ্রেস তেলতা স্টেশনে দাঁড়িয়ে যায়। কলকাতা গুয়াহাটি গরিবরথ এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে ছিল সুধানী স্টেশনে। যাত্রীদের অভিযোগ বিভিন্ন স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে আটকে থেকেও ন্যূনতম পরিষেবা মেলেনি। উল্টে বেশ কিছু স্টেশনে প্ল্যাটফর্মে বিক্রি হওয়া খাবার চড়া দামে বিক্রি হয়েছে। কোথাও আবার যাত্রীদের তথ্য জানানোর মতো কোনও কর্মীই ছিল না। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে যাত্রী সহায়তা কেন্দ্র এ দিন দুপুর একটা পর্যন্ত ফাঁকা পড়েছিল। শেষে যাত্রীদের কয়েকজন ক্ষোভ জানালে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার তাপস দেবের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। তিনি বলেন, ‘‘সাধ্য মতো যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়া হয়েছে।’’
মালদহের বেসরকারি বাস সংগঠনগুলি জানিয়েছে, আদিবাসীদের ডাকা বন্ধের জেরে ঝামেলা এড়াতে এ দিন তাঁদের বেশির ভাগ বাস চলেনি। মালদহ-কালিয়াচক ও মানিকচক হয়ে চাঁচল রুটে কিছু বাস চলেছে। ঝাড়খণ্ড দিসম পার্টির রাজ্য সম্পাদক মোহন হাঁসদা বলেন, ‘‘আমরা বিকেল তিনটের পর গাজোল ও হবিবপুর থেকে পথ অবরোধ তুলে নিয়েছি।’’