TMC

‘নেতা মানেই হনু হয়েছি ভাববেন না’

সোমবার দলের কর্মী সম্মেলনে নেতাকর্মীদের জেলায় দলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিলেন, ‘‘নেতা হয়েছি মানেই হনু হয়েছি,  এটা ভাববেন না।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পতিরাম  শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:২২
Share:

মন্ত্রণা: কর্মিসভার মঞ্চে সুব্রত বক্সী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অর্পিতা ঘোষ। সোমবার পতিরামে। নিজস্ব চিত্র

লোকসভা ভোটে বালুরঘাট আসন হারিয়েছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও উল্লেখযোগ্য ভাবে জেলার কয়েকটি এলাকায় হেরেছে রাজ্যের শাসকদল। লোকসভা ও পঞ্চায়েত ভোটের ফলের নিরিখে এগিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, দলের এমন ফলের কারণ খুঁজতে ময়দানে নেমেছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কুমার। জেলায় তৃণমূলের জনসমর্থন কেন ক্রমশ ফিঁকে হয়েছে তার কারণ বিশ্লেষণে উঠে আসে অনেক তথ্য। দলীয় সূত্রে খবর, তৃণমূল নেতাদের একাংশের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও অবাধ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বার বার। এই পরিস্থিতিতে ওই সব নেতার ভাবমূর্তি স্বচ্ছ না হলে যে আসন্ন পুরসভা নির্বাচন এবং তার পরে বিধানসভা ভোটে আশানরূপ ফল হবে না, তা বুঝেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তা-ই সোমবার দলের কর্মী সম্মেলনে নেতাকর্মীদের জেলায় দলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিলেন, ‘‘নেতা হয়েছি মানেই হনু হয়েছি, এটা ভাববেন না।’’

সোমবার বালুরঘাটের পতিরামে হাইস্কুল মাঠে ওই কর্মিসভায় রাজীব বলেন, ‘‘যদি কেউ মনে করেন দল চুলোয় যাক, আমি আমার আখের গোছাই। তা হলে তাঁদের বলছি, আমরা সবার খবর রাখছি। তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নেতা হয়েছি মানেই হনু হয়েছি এটা কেউ ভাববেন না। দলের সম্মানহানি হলে দল বরদাস্ত করবে না, সে যেই হোক না কেন।’’

Advertisement

হঠাৎ কেন এমন হুঁশিয়ারি দেওয়ার প্রয়োজন হল? দলীয় সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরে পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ— সব জায়গায় সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি করে জেলার অনেক নেতার বিরুদ্ধেই ‘আখের গোছানোর’ অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারির বরাত দেওয়া থেকে রাস্তার কাজ, আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়া থেকে কৃষকদের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ দিয়ে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দলের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি কয়েক জন তৃণমূল নেতার বাড়িতে টাকা তোলার অভিযোগে বিক্ষোভও হয়েছে।

তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, ‘পিকের টিম’ জেলায় কাজ করতে নেমে এ সব অভিযোগ পেয়ে সাধারণ মানুষের মতামত নিয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভের আঁচের কথা জানিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। তার জেরেই এ ভাবে প্রকাশ্য জনসভায় কড়া বার্তা দিতে হল। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘দলের ছোট, বড়, মেজো নেতারা যে ভাবে কাটমানি নিয়ে রাজার হালে জীবনযাপন করছেন তাতেই চটেছেন সাধারণ মানুষ। এ জন্যই আমরা ভোট পাচ্ছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন