ইতিমধ্যেই চাকরি, প্রকল্পে বাড়িও
Amit Shah

‘আমরা রাজনীতি চাই না’

তিনি তো খেয়ে চলে গেলেন, আর কেউ তো খোঁজ নিল না— বলছিলেন রাজু। একটু পরে চা বাগান থেকে ফিরবলন স্ত্রী গীতা, যিনি তিন বছর আগে রেঁধে বেড়ে খাইয়েছিলেন অমিত শাহকে।

Advertisement

নীতেশ বর্মণ

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৩৪
Share:

অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।

বাঁকুড়ার বিভীষণ হাঁসদা তাঁকে চেনেন না। তিনিও চেনেন না বিভীষণকে। তবু বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার আদিবাসী পরিবারটির সঙ্গে এক বিন্দু এসে যাচ্ছেন নকশালবাড়ির রাজু মাহালিরা। তিন বছর আগে তাঁদের বাড়িতে পাত পেড়ে খেয়ে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। এ বারে যাবেন বিভীষণের বাড়িতে।

Advertisement

তিনি তো খেয়ে চলে গেলেন, আর কেউ তো খোঁজ নিল না— বলছিলেন রাজু। বুধবার তাঁর ভিটেয় সাত বছরের মেয়ে খেলে বেড়াচ্ছে। একটু আগে রাজু ফিরেছেন কাজ থেকে। একটু পরে চা বাগান থেকে ফিরবেন স্ত্রী গীতা, যিনি তিন বছর আগে রেঁধে বেড়ে খাইয়েছিলেন অমিত শাহকে। রাজু বলছেন, ‘‘আমাদের নিয়ে রাজনীতিই হয়েছে শুধু।’’

কী ভাবে? তাঁদের কথায়, ‘‘অমিত শাহ চলে গেলে বিজেপির কেউ আর খোঁজ নিতে আসেনি। পরদিন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এসেছিলেন। চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু...।’’ যদিও প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজুদের পরিবারের এক জনকে স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয়েছে। গীতাঞ্জলি প্রকল্পে বাড়ি, ২০ হাজার টাকার ঋণ এবং আরও কিছু সরকারের প্রকল্পের টাকা দেওয়া হয়েছে। গৌতম দেবও বলেন, ‘‘আমি নিজে ওদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি।’’

Advertisement

রাজু সরাসরি না বললেও তাঁর মূল ক্ষোভ কিন্তু বিজেপি-রই বিরুদ্ধে। রাজু বিস্তা জনসভা করতে এসেছেন এলাকায়, কিন্তু বিজেপির কেউ আসেনি তাঁদের খোঁজে— এই নিয়েও ক্ষোভ ঝরে পড়ল তাঁর গলায়। যদিও রাজু মাহালিদের অবস্থা নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে।

তৃণমূলের দাবি, বিজেপি আদিবাসীদের নিয়ে রাজনীতি করছে। শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘আমরা মাহালি পরিবারের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। তাঁর পরিবারও যে বিজেপির পাশে রয়েছে রামনবমীর মিছিলে হেঁটে তার প্রমাণ দিয়েছেন। তৃণমূল শুধু রাজনীতি করেছে।’’ যদিও গীতাদেবীর কথায়, ‘‘সে মিছিলে সবাই যেতে পারে।’’

আগের থেকে অনেকটা রোগা হয়েছেন রাজু মাহালি। জানালেন, দিন আনা দিন খাওয়ার সংসার। লকডাউনে খুব খারাপ দিন কেটেছে। ২-১ কেজি চাল ছাড়া কিছুই মেলেনি। কাজের অভাব পড়েছে তাই কাজ খুঁজতে গিয়েছেন। তখনই গীতা বলে ওঠেন, ‘‘আমরা রাজনীতি করতে না চাইলেও আমাদের নিয়ে রাজনীতি হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন