রামের মিছিলে সব এক, অস্ত্র নেওয়ারও অভিযোগ

শনিবার পুলিশের সামনেই উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র নিয়ে রামনবমীর মিছিল করার অভিযোগ উঠেছে। যে মিছিলে ছিলেন চাকুলিয়ার কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএমের লোকজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০১:২৯
Share:

অস্ত্র নিয়ে রামনবমীর মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশকেও এই নিয়ে সতর্ক করেছেন তিনি। তার পরেও শনিবার পুলিশের সামনেই উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র নিয়ে রামনবমীর মিছিল করার অভিযোগ উঠেছে। যে মিছিলে ছিলেন চাকুলিয়ার কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপি এবং সিপিএমের লোকজন।

Advertisement

স্থানীয় রামনবমী উদ্‌যাপন কমিটির উদ্যোগে করা এই মিছিল সম্পর্কে জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের দাবি, ‘‘কেউ অস্ত্র নিয়ে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন বলে পুলিশের নজরে পড়েনি।’’ তিনি দাবি করেন, পুলিশ পুরো মিছিলের ভিডিও রেকর্ডিং করেছে। যদিও এই মিছিলের যে ভিডিও রেকর্ডিং সংবাদমাধ্যমের একাংশের হাতে এসেছে, তাতে অস্ত্র হাতেই লোকজনকে দেখা যাচ্ছে। এসপি আরও বলেন, ‘‘সব কিছু খতিয়ে দেখছি। তেমন কিছু হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, কানকি এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা মিছিলে যোগ দেওয়ার আগে হাতে তলোয়ার, ত্রিশূল ও দা উঁচিয়ে কারও মোবাইল ফোনে ভিডিও রেকর্ডিং করিয়েছিলেন। তবে তাঁরা অস্ত্র নিয়ে মিছিলে ঢোকেনি।

Advertisement

যদিও পুলিশকর্তার এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন এলাকারই বেশ কিছু মানুষ। তাঁরা বলছেন, সব দলের লোক মিলেমিশে একসঙ্গে মিছিল করছেন, এটাই তো লক্ষ্যণীয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন কানকির স্টেশনমোড়ের হনুমান মন্দির থেকে চাকুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকার প্রায় কয়েক হাজার বাসিন্দা রামনবমীর মিছিল শুরু করেন। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে মিছিলটি স্টেশনমোড় এলাকার ওই হনুমান মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের সামনে স্কুল পড়ুয়ারা রাম-লক্ষ্মণ-সীতা ও হনুমানের বেশে যোগ দেয়। অভিযোগ, মিছিলের মাঝের ও শেষের অংশে কিছু বাসিন্দাকে হাতে অস্ত্র উঁচিয়ে হাঁটতে দেখা গিয়েছে। ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন সদ্য কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগদানকারী চাকুলিয়ার জেলা পরিষদ সদস্য তথা ওই রামনবমী উদযাপন কমিটির সম্পাদক ভোলানাথ রায়, তৃণমূল পরিচালিত কানকি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান স্বপন সরকার, গোয়ালপোখর-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ খেতাবুদ্দিন, ওই ব্লকের কংগ্রেস সভাপতি মহম্মদ মোস্তাফা, স্থানীয় বিজেপি নেতা বিশ্বনাথ মৃধা, সিপিএমের চাকুলিয়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক অশোক সিংহ প্রমুখ। ভোলানাথবাবুর দাবি, ‘‘মিছিলে কেউ অস্ত্র নিয়ে যোগ দেননি। অপপ্রচার চলছে।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল ও জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের দাবি, জেলার আইনশৃঙ্খলার যাতে অবনতি না হয়, তা পুলিশ, প্রশাসন ও সমস্ত রাজনৈতিক দলের দেখা উচিত।

বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দামের বক্তব্য, দলের কোনও নেতা ও কর্মী জেলার কোথাও যাতে অস্ত্র নিয়ে কোনও মিছিল না করেন, সেই ব্যাপারে দলের তরফে আগেই নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে কেউ অস্ত্র নিয়ে রামনবমীর মিছিলে যোগ দিয়ে থাকলে পুলিশ নেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন