ধীরে ধীরে বিপন্মুক্ত ধূপগুড়ির নির্যাতিতা

ক্রমশ সুস্থ হচ্ছেন ধূপগুড়ির নির্যাতিতা আদিবাসী বধূ। তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটা ভাল হওয়ায় শনিবার সকালে তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট থেকে সরিয়ে প্রসূতি বিভাগে স্থানাস্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

ক্রমশ সুস্থ হচ্ছেন ধূপগুড়ির নির্যাতিতা আদিবাসী বধূ। তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটা ভাল হওয়ায় শনিবার সকালে তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট থেকে সরিয়ে প্রসূতি বিভাগে স্থানাস্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

গত শনিবার সন্ধেয় ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয় তিন সন্তানের জননী আদিবাসী এই বধূকে। ধর্ষণের পর তাঁর শরীরে ভিতরে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়ার প্রমাণও পেয়েছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। রবিবার রাতে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা তাঁর অস্ত্রোপচার করেছেন।

তবে মহিলার শারীরিক অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হওয়ায় শনিবার সকালে তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট থেকে সরিয়ে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা তাঁর শারীরিক অবস্থার পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকায় তাঁকে এদিনও আর রক্ত দিতে হয়নি বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা। আগের থেকে এদিন অনেকটাই স্বাভাবিক আছেন বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে।

Advertisement

নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। ধূপগুড়ির নির্যাতিতা আদিবাসী গৃহবধূর পরিবারের এটাই নিত্যকার ছবি বলে দাবি গ্রামের মানুষের। নেই জমি জায়গাও। দরমার বেড়া দেওয়া একটা ছোট্ট ঘর জুড়ে দারিদ্র্যের ছাপ স্পষ্ট। নির্যাতিতার তিনটি সন্তান। কোলের মেয়েটির বয়স মাত্র এক বছর। আর এই ছোট শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়েই গণধর্ষণের শিকার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য পেশায় দিনমজুর স্বামীকে ছুটে আসতে হয়েছিল জলপাইগুড়ি হাসপাতালে। এখানে এসে ওই শিশুটিও অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকেও ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এখন অবশ্য ওই ছোট্ট শিশু সহ তিন সন্তানকে নিয়ে বাড়িতেই রয়েছেন নির্যাতিতার স্বামী। তার মধ্যে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে এসে স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে হচ্ছে।

ওই বিস্তীর্ণ গ্রামীণ জনপদে নির্যাতিতার এই পরিবার সহ তিনটি আদিবাসী পরিবারের বসবাস বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। নির্যাতিতার বাড়িতে সম্প্রতি একটি ইন্দিরা আবাসের ঘর স্থানীয় পঞ্চায়েত করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু আজও সেই ঘর অসম্পূর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। নৃশংস এই ধর্ষণ কাণ্ডের পরে আজ পর্যন্ত এই পরিবারের হাতে সরকারি ভাবে কোনও ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ।

এই অভিযোগের সত্যতাও স্বীকার করেছেন খোদ জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়াও। জেলাশাসক শনিবার সন্ধেয় বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসনের তরফে এখনও নির্যাতিতার পরিবারের জন্য কোনও আর্থিক সাহায্য দিতে পারিনি। এই বিষয়ে আইন মেনেই সরকারি নিয়মে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘ওই পরিবারের জন্য একটি শৌচাগারও আমরা গড়ে দেবো। ইতিমধ্যেই একটি ঘর নির্মাণ করার কাজ শুরু করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন