পাশে: বিরাট কোহালির সঙ্গে রিচা ঘোষ।
ভারতের যখন ৭ উইকেটে ১৭৮ রান। সেই সময় ব্যাট হাতে মাঠে নামেন রিচা ঘোষ। শিলিগুড়ির বাড়িতে টিভিতে তখন সকলের চোখ রিচার দিকে। যখন প্রথম বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৪ মারলেন, মনমরা ভারতীয় শিবির যেন চাঙ্গা হল। নড়েচড়ে বসলেন রিচার বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ এবং পরিবারের অন্যেরা। মারলেন তিনটি ৪। যখন একটি ছক্কা মারলেন, হাততালিতে ভরে উঠল রিচার শত-ট্রফির মাঝে টিভির ঘরটি। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে নেতাজি মোড় এলাকায় রিচা ঘোষের বাড়ির ছবি। ভারতীয় দলের হারে মন খারাপ হলেও রিচার ব্যাটে সন্তুষ্ট পরিবার এবং শহরের ক্রীড়াপ্রেমীরা।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একদিনের ক্রিকেটের প্রথম ম্যাচে নজর কাড়ল রিচার ব্যাট। ২৯ বলে তিনটি ৪, একটি ছক্কার সৌজন্যে ৩২ রান করে নজর কাড়েন এই উঠতি উইকেটকিপার। রিচার বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘ওঁর আরও বড় রানের খিদে রয়েছে। আশা করি, আগামী দিনের ম্যাচগুলিতেও আরও ভাল খেলবে। শুধু দেখে খেলতে বলেছি।’’ তিনি জানান, গত রবিবার প্রস্তুতি ম্যাচে ভুল শট মারতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন রিচা। ভাল রান করতে পারেননি সেদিন। তার উপর এ দিন দলের খারাপ পরিস্থিতির সময় মেয়ে কেমন খেলবে চিন্তায় ছিলেন। মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথাও হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়া সফরে তিন ফরম্যাটে সুযোগ পেয়েছেন রিচা। ৩টি একদিনের এবং ৩টি টি-২০ ম্যাচে ১১ জনের দলে উইকেটকিপার হিসেবে তাঁকেই সুযোগ দিয়েছেন নির্বাচকেরা। প্রথম দিনেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সাত নম্বরে নেমে ভারতকে লড়াইয়ের রানে পৌঁছে দিয়েছেন। ৭ উইকেট হারিয়ে ভারত যখন ১৭৮ রান, তখন ঝুলন গোস্বামী এবং রিচার ৪৫ রানের পার্টনারশিপ ভারতকে ৫০ ওভারে ২২৫ রানে পৌঁছে দেয়। যদিও ঝুলন ২০ রানে আউট হয়েছেন।
শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের ক্রিকেট সচিব মনোজ বর্মা জানান, এর আগে রিচা টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভাল খেলেছে। প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক এবং টেস্টে সুযোগ পেয়েছেন। একটা উন্মাদনা ছড়িয়েছে ক্রিকেট শিবিরে। অনেকে আশায় ছিলেন তাঁর প্রথম একদিনের ম্যাচ দেখতে। সাত নম্বরে নেমে যে ভাবে খেলেছেন তাতে আগামী ম্যাচগুলিতেও বড় রানের আশা করা যায়। মনোজ বলেন, ‘‘রিচার সাফল্য উত্তরবঙ্গে মেয়েদের ক্রিকেটকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’