TMC-BJP Clash

হাসপাতালে আহত বিজেপি কর্মীরা, বাইরে সুকান্ত-শুভেন্দুকে ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূলের! দু’পক্ষের অশান্তিতে উত্তেজনা কৃষ্ণনগরে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় যাওয়ার পথে ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তিন জনের। দু’জন শক্তিনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের দেখতে শনিবার বিকেলে হাসপাতালে গেলে শুভেন্দু-সুকান্তকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৫৪
Share:

কৃষ্ণনগরের হাসপাতালের বাইরে তৃণমূলের বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।

নদিয়ার তাহেরপুরে ট্রেনের ধাক্কায় আহত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হাসপাতালে দেখতে গিয়ে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। দেখানো হয় কালো পতাকা, উঠল ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও! পাল্টা বিজেপিও স্লোগান দেয় তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দুই পক্ষের হাতাহাতি, ধস্তাধস্তিতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর হাসপাতাল চত্বর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শুভেন্দুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় দু’জন তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছেন বলে খবর।

Advertisement

শনিবার তাহেরপুরে প্রথমে প্রশাসনিক এবং পরে একটি রাজনৈতিক জনসভা করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। সেই উপলক্ষে দূরদূরান্ত থেকে বিজেপি সমর্থকেরা নদিয়ায় আসেন। মুর্শিদাবাদ থেকে একটি বাস ভাড়া করে এসেছিলেন অন্তত ৪০ জন। সকাল সকাল তাহেরপুর পৌঁছে যান তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, তাঁদেরই কয়েক জন তাহেরপুর স্টেশন সংলগ্ন রেললাইনে প্রাতঃকৃত্য সারছিলেন। কুয়াশার কারণে ট্রেনের গতিবিধি তাঁরা বুঝতে পারেননি। ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিন জনের। দু’জন শক্তিনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল শুরু হয়। শনিবার সকালেই মৃত বিজেপি সমর্থকদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে নির্দেশ দেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের কয়েক জন হাসপাতালেও পৌঁছোন। বিকেলে সভা সেরে শুভেন্দু এবং সুকান্ত হাসপাতালে আহতদের দেখতে গেলে উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূলের অভিযোগ, সভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু-সুকান্ত। তারই প্রতিবাদে তাঁদের হাসপাতাল চত্বরে কালো পতাকা দেখান এবং স্লোগান দেন। বিজেপি নেতাদের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা।

Advertisement

মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দু’পক্ষের কর্মীদের মধ্যে শুরু হয় ধস্তাধস্তি-হাতাহাতি। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ শুরু করেন বলে অভিযোগ।তৃণমূলের দাবি, বাহিনীর মারে তাদের দুই কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। জেলা বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, শাসকদলের গুন্ডাবাহিনীর হাতে আক্রান্ত হতে হয়েছে তাঁদের নেতাদের।

জেলা বিজেপির সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা মৃত অবস্থায় হাসপাতালে পড়ে আছেন। সমবেদনা জানানোর নামে তৃণমূল যেখানে নাটক করতে এসেছিল। আমাদের নেতারা সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টাও হচ্ছিল। আমাদের কর্মীদের ওপরে চড়াও হয় তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। এ রকম একটি শোকের ঘটনায় এই ধরনের আচরণ অপ্রত্যাশিত।’’

কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতি অয়ন দত্ত বলেন, ‘‘বিজেপির দুই নেতা আমাদের দিদির নামে নোংরা এবং কুরুচিকর ভাষায় ভাষণ দিয়েছেন। এটা আমরা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারিনি। আমাদের দলের কর্মী-সমর্থকেরা তার প্রতিবাদ করেছে। বিনা প্ররোচনায় লাঠিচার্জ করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাদেরকে দলের কাজে ব্যবহার করার নিন্দা জানাচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement