তৃণমূলের দফতরে গেরুয়া রং 

দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট আসনে তৃণমূল প্রার্থী পরাজিত হওয়ার পরেই দেখা যায়, জেলায় তৃণমূলের অন্যতম শক্তঘাঁটি গঙ্গারামপুর শহরে ব্যাপক ভোটে পিছিয়ে গিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস

গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০৪:১০
Share:

বদল: তৃণমূলের কার্যালয়ে বাম পতাকা। নিজস্ব চিত্র

লোকসভায় ভরাডুবির পরে পার্টি অফিস দখলের ধারা শুরু হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। জেলার গঙ্গারামপুরে তৃণমূলের রাশ আলগা হতেই পার্টি অফিস দখল শুরু করেছে বাম ও বিজেপি। কোথাও তৃণমূলের পার্টি অফিস বিজেপি দখল করেছে, কোথাও আবার তৃণমূলের থেকে নিজেদের পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করেছে সিপিএম। দুই ক্ষেত্রেই তৃণমূল অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও রকম বাধাই দিতে পারেনি।

Advertisement

দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট আসনে তৃণমূল প্রার্থী পরাজিত হওয়ার পরেই দেখা যায়, জেলায় তৃণমূলের অন্যতম শক্তঘাঁটি গঙ্গারামপুর শহরে ব্যাপক ভোটে পিছিয়ে গিয়েছে বিজেপি। শহরের ১৮টি ওয়ার্ডের ১৭টিতেই বিপুল লিড নিয়ে প্রায় ১২ হাজার ভোটে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। মাত্র একটি ওয়ার্ডে ২৩ ভোটের লিড নিতে পেরেছে তৃণমূল। তারপরেই তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে দিয়ে পরাজিত প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে জেলা সভাপতি করেন সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘোষণার পরে জেলায় তৃণমূলের দলীয় কোন্দল আরও বাড়ে। তৃণমূলের এই দলীয় কোন্দলের জেরে সুযোগ বুঝে বিজেপি প্রথমে শহরের শিববাড়ি এলাকার তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল করে রাতারাতি গেরুয়া রং করে এলাকায় জাঁকিয়ে বসে।

সেই রেশ কাটতে না কাটতেই গত মঙ্গলবার রাতে শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বোরডাঙ্গির চরপারার তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল করে সিপিএম। সিপিএমের দাবি, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল জয়ী হওয়ার পরের দিনই এই পার্টি অফিসটি দখল করে নিয়েছিল তৃণমূল। তার ঠিক পাঁচ বছর পরে কার্যত বিজেপির ‘সৌজন্যে’ সেই পার্টি অফিস উদ্ধার করে সিপিএম। সিপিএমের গঙ্গারামপুর এরিয়া সম্পাদক অচিন্ত্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গত লোকসভায় আমরা হেরে যাওয়ার পরে তৃণমূল আমাদের পার্টি অফিস দখল করেছিল। এ দিন সেই পার্টি অফিসটি স্থানীয় বাসিন্দা ও স্থানীয় বামকর্মীরা উদ্ধার করেছে।’’ সূত্রের খবর, এ দিন রাতে একদল বামকর্মী বিনা বাধায় পার্টি অফিসে ঢুকে তৃণমূলের ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন খুলে ফেলে সেখানে লাল ঝাণ্ডা লাগিয়ে দেন। এদিকে, একের পর এক দলীয় অফিস দখল হয়ে গেলেও এখনও তৃণমূলের তরফে এনিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Advertisement

রাজনৈতিক মহল বলছে, লোকসভায় বিজেপির উত্থান এবং সেই সঙ্গে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের সুযোগে সিপিএম ও বিজেপি পার্টি অফিসগুলি দখল করলেও কোথাও প্রতিরোধের মুখে পড়েনি।

তবে জেলা তৃণমূলের নয়া সভাপতি অর্পিতা বলেন, ‘‘যদি কোথাও আমাদের পার্টি অফিস দখল হয়ে থাকে, তা হলে তা পুনর্দখল করা হবে।’’

কিন্তু কেন তৃণমূলের দফতর বিজেপি দখল করছে? বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকারের বক্তব্য, ‘‘এলাকার মানুষই ওই পার্টি অফিস চালাতেন। কিন্তু ভোটে ওখানে আমরাই লিড পেয়েছি। ওই এলাকার মানুষ দলবদল করে বিজেপিকে সমর্থন করছেন। তাঁরাই তাই কার্যালয়টিও বিজেপির করে নিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন