প্রস্তুত: সাজ পোশাক প্রায় তৈরি উত্তম কুন্ডুর। নিজস্ব চিত্র
চার্চ থেকে পার্ক, রাজপথ থেকে অলিগলি ঘুরে ছোটদের উপহার বিলোবেন কোচবিহারের ‘সান্তাক্লজ’ উত্তম কুন্ডু। পেশায় ব্যবসায়ী উত্তমবাবুর বাড়ি কোচবিহার শহরের গুঞ্জবাড়ি এলাকায়। বয়স ৫৫ বছর। টানা দেড় দশকের বেশি সময় ধরে ফি বছর বড়দিনে এটাই তাঁর বার্ষিক রুটিন। এ বারেও সান্তাক্লজ সেজে শহর ঘুরে বেড়াতে যাবতীয় প্রস্তুতিও প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
আজ, সোমবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে শহর ও লাগোয়া এলাকা পরিক্রমা শুরু করবেন তিনি। উত্তমবাবু বলেন, “টানা সতেরো বছর ধরে বড়দিনে সান্তাক্লজ সেজে বেরোনর রুটিনে একবারও ছেদ পড়েনি। যতদিন সুস্থ থাকব ওই ধারাবাহিকতা বজায় রাখব। ছোটদের সামান্য উপহার দিয়ে যে আনন্দ, হাসি দেখি সেটাই বড় প্রাপ্তি।”
পরিবার সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০০০ সালে বড়দিনে ছোটদের মুখে হাসি ফোটানোর তাগিদেই প্রথম সান্তা সাজেন তিনি। যেখানেই গিয়েছেন তাকে ঘিরে ধরেছে ছোটরা। বড়দের অনেকেও হাত বাড়িয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। একটা চকোলেট, কেক বা ছোট্ট উপহার পেয়ে অনেকে উচ্ছ্বাসেও মাতে। কয়েক জন অভিভাবক বলেন, “আমরা যত দামি চকলেট বা অন্য কিছু দিই না কেন সান্তাক্লজের কাছ থেকে পাওয়া উপহারের গুরুত্ব আলাদা। মেয়ের ওই খুশিমুখ দেখে ভাল লাগে। তাই সান্তার কাছে নিয়ে যাই।”
‘সান্তাক্লজ’ উত্তমবাবুর ঝোলায় থাকে ছোট্ট সাউন্ড সিস্টেম। গানের ছন্দে তিনি ছোটদের সঙ্গে নাচেন, হইচই করেন আবার নিজস্বী তোলার আবদারও সামলান। কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ থেকে বিলি করেন রকমারি উপহার। এ বারেও প্রায় চার হাজার টাকার চকোলেট, কেক, ছেলেদের জন্য খেলার বল, মেয়েদের জন্য হেয়ার ব্যান্ডের মতো নানা সামগ্রী কিনেছেন তিনি। ভাড়া নিয়েছেন একটি ছোট গাড়িও। তিনি জানিয়েছেন, একসময় সাইকেল, মোটরবাইক থেকে টোটো নিয়েও বেরিয়েছেন। এ বার গাড়ি নিয়ে ঘুরবেন।
ওই কাজে পাশে দাঁড়িয়েছেন স্ত্রী রিঙ্কু দেবী। সারা বছর নিজের হাত খরচের টাকা অল্প করে জমিয়ে রাখেন তিনি। ডিসেম্বরের বড়দিনের আগে তা তুলে দেন উত্তমবাবুর হাতে। রিঙ্কুদেবী বলেন, “ওর আনন্দ তো বটেই। ছোটদের মুখে বিশেষ দিনে হাসি ফোটানোর তাগিদটা আমাকেও নাড়া দিয়েছে। তাই পাশে থাকি।”