বিক্ষিপ্ত অশান্তি

দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলা এবং উত্তর দিনাজপুরের মেখলিগঞ্জ ও ইসলামপুরের চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায় এ দিন সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল যৌথমঞ্চ। এ দিন ছিল তাদের ডাকা চা বাগান বন্‌ধের দ্বিতীয় দিন। এক নজরে তারই ছবি

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০৪:১০
Share:

প্রহার: বন্‌ধ সমর্থকদের উপরে পুিলশি লাঠিচার্জ জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল।

ন্যূনতম মজুরি চুক্তির দাবিতে যৌথমঞ্চের ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটল উত্তরবঙ্গের কিছু অংশে। দফায় দফায় মিছিল, জাতীয় সড়ক অবরোধ, অবরোধ তুলতে পুলিশের লাঠি, থানা ঘেরাও সবমিলিয়ে উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলা এবং উত্তর দিনাজপুরের মেখলিগঞ্জ ও ইসলামপুরের চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায় এ দিন সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল যৌথমঞ্চ। এ দিন ছিল তাদের ডাকা চা বাগান বন্‌ধের দ্বিতীয় দিন। এক নজরে তারই ছবি।

Advertisement

জলপাইগুড়ি

জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া ডেঙ্গুয়াঝার চা বাগান থেকে ধর্মঘট সমর্থনকারীরা মিছিল করে গোশালা মোড়ে গিয়ে সকাল দশটা নাগাদ ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। অবরোধ তুলতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী যায়৷ অনুরোধেও তাঁরা অবরোধ না তোলায় পরে পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধকারীদের হঠাতে লাঠিচার্জ শুরু করেন। আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতা রাজু সাহানি-সহ ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়৷ ঘটনার পরই মিছিল করে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় যায় সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁরা থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ ফের লাঠি চালায় বলে অভিযোগ৷ কয়েকজন নেতা জখম হন। এরপরেই ধৃতদের ছাড়াতে ডেঙ্গুয়াঝার থেকে তির-ধনুক নিয়ে মিছিল শুরু করেন বাগানের শ্রমিকরা৷ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে প্রতিবাদ দিবসের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট৷

Advertisement

শিলিগুড়ি

ধর্মঘটের তেমন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি শিলিগুড়ি শহরে। বেসরকারি বাস কম চললেও সরকারি বাস পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল। সরকারি দফতরে উপস্থিতির হারও ছিল ভালই।

বীরপাড়া-বানারহাট

ডুয়ার্সের বানারহাট, গয়েরকাটা, বিন্নাগুড়ি, বীরপাড়া, মাদারিহাট হয়ে যাওয়া বিভিন্ন রাস্তায় এ দিন সরকারি-বেসরকারি গাড়ি চলেনি। তবে, পর্যটকদের ছোট গাড়ি আটকানো হয়নি। বন্ধ ছিল দোকান-বাজার। অফিস, স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও উপস্থিতি হার কম ছিল। বানারহাট চা বাগানে তৃণমূলের নেতারা শ্রমিকদের কাজ করতে বলায় তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় শ্রমিকরা। কয়েকটি বাগানের গেটে বন্‌ধ সমর্থনকারীরা পিকেটিং করেন। তেলিপাড়া ও গয়েরকাটায় অসমগামী ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে।

আলিপুরদুয়ার

আলিপুরদুয়ারে এ দিন চা বাগান খোলাতে পুলিশ তৎপর হয় বলে অভিযোগ যৌথমঞ্চের। মথুরা চা বাগানে বন্‌ধ সমর্থনকারীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা হয়। কালচিনিতে দুজন বনধ সমর্থককে পুলিশ আটক করলে আন্দোলনকারীরা কালচিনি থানায় বিক্ষোভ দেখায়। হাসিমারা ফাঁড়িতেও শতাধিক বনধ সমর্থককে আটক করা হলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ জানান, জেলায় ১৬৮ টি চা বাগানের মধ্যে ১৫৮টি খোলা ছিল খোলা। বাকি ১০টি চা বাগানে সাপ্তাহিক ছুটি ছিল।

কালচিনি

কালচিনিতে নারায়ণ বাঙ্গার ও ত্রিয়োফিল সোরেন নামে দুই বিজেপি নেতা গ্রেফতার হন। সকাল দশটা থেকে বেলা এগারোটা পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখান বন্‌ধ সমর্থনকারীরা। হাসিমারা ফাঁড়ি এলাকায় রাস্তায় জমায়েত হওয়ায় একশো একাত্তর জনকে আটক করে পুলিশ।

মেখলিগঞ্জ-ইসলামপুর

বন্‌ধে সাড়া মেলেনি মেখলিগঞ্জ এবং ইসলামপুর মহকুমাতে। মেখলিগঞ্জে তিনটি চা বাগানে এ দিন কাজ হয়েছে। খোলা চিল চোপড়া, ইসলামপুরের বেশির ভাগ চা বাগান। সিটুর উত্তরদিনাজপুরের জেলা সম্পাদক স্বপন গুহনিয়োগী অবশ্য দাবি করেন অনেক চা বাগানেই বনধের সমর্থনে শ্রমিকেরা কাজ করেননি। তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের দাবি বন্‌ধের কোনও প্রভাব দেখা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন