স্কুল পড়ুয়ারাই অভিযুক্ত, চিন্তা বাড়ছে

শিক্ষক সুনির্মল গুহর মেয়ে চ্যাংরাবান্ধা হাইস্কুলে পড়াশোনা করে। তিনি বলেন,“আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে আমাদের। মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে কাছেপিঠেই থাকছি। আমরা চাই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হোক যাতে আগামীতে কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর আগে দু’বার ভাবেন।”

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক জন শ্লীলতাহানি হওয়ার পরেও লজ্জায় চুপ করেছিল। আরেক জন বাড়িতে রাখা কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। দু’জনেই স্কুল ছাত্রী। একদিনের ব্যবধানে কোচবিহারে এমন দুটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। কেউ মেয়েকে স্কুল পৌঁছে দিয়েই বেরোচ্ছেন অন্য কাজে। কারও মা দাঁড়িয়ে থাকছেন স্কুলের গেটের সামনে। পুলিশ অবশ্য দুটি ঘটনাতেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার চ্যাংরাবান্ধার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার চার দিনের মাথায় ময়নাগুড়ির বর্মপুর থেকে অভিযুক্ত দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রকে গ্রেফতার করে। এ দিন দুপুরেই কোতোয়ালি থানার দেওয়ানবস থেকে অভিযুক্ত নবম শ্রেণির দুই ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

কয়েকজন বাসিন্দার কথায়, “দুটি ঘটনাতেই দেখা যাচ্ছে স্কুল পড়ুয়ারা অভিযুক্ত। সেক্ষেত্রে কার উপরে ভরসা রাখব। স্কুলের ভিতরেও তো তা হলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে জানিয়েছেন, এমন অভিযোগের ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

শিক্ষক সুনির্মল গুহর মেয়ে চ্যাংরাবান্ধা হাইস্কুলে পড়াশোনা করে। তিনি বলেন,“আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে আমাদের। মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে কাছেপিঠেই থাকছি। আমরা চাই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হোক যাতে আগামীতে কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর আগে দু’বার ভাবেন।”

Advertisement

এমন আতঙ্কের মধ্যে পড়েছেন বহু মানুষ। কোচবিহারের শহরের এক বধূ জানান, তাঁর মেয়ে শহরের একটি বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। তাঁর স্বামী ব্যবসার কাজে বাইরে বাইরে থাকেন। তিনি বলেন, “মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাই। আবার নিয়ে আসি। মনকে শান্ত রাখতে পাচ্ছি না।” আবার আরেক অভিভাবক জানান, “মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিয়েও ভয় হয়।”

গত ২ ফেব্রুয়ারি স্কুলের সামনেই শ্লীলতাহানি করা হয় চ্যাংরাবান্ধা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। সোমবার ওই ভিডিও সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ভাইরাল হয়। ওইদিন ওই ছাত্রী থানায় অভিযোগ জানায়। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।

মঙ্গলবার একই ঘটনা ঘটে কোতোয়ালি থানার দেওয়ানবস হাইস্কুলের সামনে। ওই স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে রাস্তায় আটকে শ্লীলতাহানি করে তারই দুই সহপাঠী। লজ্জায় বাড়ি ফিরে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই ছাত্রী। বুধবার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ এদিন সকালে ওই স্কুলে যায়। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে। স্কুলেই ছিল অভিযুক্ত দুই ছাত্র। অভিভাবকদের ডেকে পুলিশ ওই দুই ছাত্রকে নিয়ে যায়। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনন্তকুমার নাগ বলেন, “স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এমন ঘটনা ভাবতে পাচ্ছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন