বিধায়কের বিরোধিতায় মিছিল।—নিজস্ব চিত্র।
প্রার্থী বাছাই নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব গড়াল মিছিলে।
বর্তমান তৃণমূল বিধায়ককে এ বারের ভোটে টিকিট দেওয়া যাবে না দাবি করে ময়নাগুড়ি শহরে পতাকা ফেস্টুন নিয়ে মিছিল করলেন দলেরই কর্মী-সমর্থকরা। রাজ্যসভা ভোটের সময় আরএসপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ময়নাগুড়ির বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী। গত লোকসভা ভোটের সময় বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে জয়ীও হন অনন্তবাবু। বুধবার ময়নাগুড়ির রাস্তায় ‘দলনেত্রী’র ছবি-সহ তৃণমূলের পতাকা-পোস্টার নিয়ে মিছিল থেকে স্লোগান উঠল ‘অনন্তদেব অধিকারীকে প্রার্থী করা চলবে না।’ মিছিলের সামনে ব্যানারে দলনেত্রীকে ‘মমতাদিদি’ সম্বোধন করে দাবি জানানো হয়, ‘অনন্তবাবুকে প্রার্থী করলে তৃণমূলের ক্ষতি হয়ে যাবে’। এ দিনের মিছিলের পরে দলের অন্দরেই বিতর্ক বেধেছে। ময়নাগুড়ি দুই নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শশাঙ্ক রায়বাসুনিয়ার অনুগামীদের দেখা গিয়েছে বলে দলের একাংশের দাবি। যদিও, শশাঙ্কবাবু দাবি করেছেন, তিনি কলকাতায় রয়েছেন। মিছিলের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
বর্তমান বিধায়ক অনন্তবাবুকেই এ বারে ফের ময়নাগুড়িতে প্রার্থী করা হবে বলে দলের অন্দরে চর্চা রয়েছে। এ দিকে ময়নাগুড়ির ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শশাঙ্কবাবুর অনুগামীরা অনন্তবাবুকে প্রার্থী চান না বলে একাধিকবার প্রকাশ্যে দাবি করেছেন। দলের অন্দরের খবর, শশাঙ্কবাবুর এক আত্মীয়কে ময়নাগুড়িতে প্রার্থী করতে চাইছেন দলের নেতাদের একাংশ। ভোট ঘোষণার আর দেরি নেই বুঝেই সরাসরি দলের রাজ্য নেতৃত্বের ওপর চাপ তৈরি করতেই এ দিন মিছিল করা হয়েছে বলে তৃণমূলের এই নেতাদের কয়েকজন দাবি করেছেন। এ দিনের মিছিলের সামনে ছিলেন সরিফুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, ‘‘উপনির্বাচনে আমরাই খেটে অনন্তবাবুকে জয়ী করেছিলাম। কিন্তু ভোটে জেরা পর তিনি বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। সে কারণেই প্রার্থী বদল করতে চেয়েছি।’’
অন্যদিকে, তৃণমূলের ময়নাগুড়ির আরেক ব্লক সভাপতি মনোজ রায় বলেন, ‘‘দলের কোনও সক্রিয় কর্মী মিছিলে ছিলেন না। আমরা ভিডিও ফুটেজ জোগাড় করে নেতৃত্বকে পাঠাব।’’ জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যতদূর জানি দলের কোনও কর্মী-সমর্থক মিছিলে ছিলেন না। তবে দলের পতাকা ব্যবহার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দল এ ধরনের কোনও মিছিল সমর্থন করে না। কড়া পদক্ষেপ হবে।’’ আর বিধায়ক অনন্তবাবুর কথায়, ‘‘দলের থেকে কোনও ব্যক্তি বড় নয়। নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’