জলপাইগুড়িতে মহম্মদ সেলিম।
তৃণমূলে এক স্থানীয় নেত্রী সহ সাতজনকে বহিষ্কারের ঘটনাকে ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মহম্মদ সেলিম। শুক্রবার শহরের মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত বামফ্রন্টের নির্বাচনী সভায় তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘জালিয়াতি’ এবং ‘সন্ত্রাস’ সৃষ্টির অভিযোগ আনেন। সেই সঙ্গে তৃণমূলে ব্রাত্য হয়ে যাওয়া পুরনো কর্মীদের মন পেতে ‘এ দল ও দল থেকে আসা’ লোকজনেরা দলে সর্বময় হয়ে উঠেছে বলেও কটাক্ষ করেছেন।
দল বিরোধী কাজের অভিযোগে গত ৭ এপ্রিল মহিলা নেত্রী সাগরিকা সেন সহ সাত জনকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। এই ঘটনাকে ঘিরে শহরে শাসক দলের অন্দরে চাপানউতোর তুঙ্গে ওঠে। ভোটের মুখে শাসক দলে বহিষ্কারের প্রসঙ্গ সামনে রেখে এদিন নির্বাচনী সভায় বক্তব্য শুরু করেন মহম্মদ সেলিম। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে গত ২৩ মার্চ রাতে দলীয় কর্মীদের হাতে তৃণমূল সাংসদের হেনস্থার ঘটনাও। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলে ধুতি ধরে টানাটানি হচ্ছে। বহিষ্কারের নাটক চলছে। সাংসদ নিজের দলের কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন।’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এদিন সন্ত্রাস সৃষ্টি এবং জালিয়াতির অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ভোটের সময় মানুষ ভোট প্রার্থনা করে। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ঘরে ঢুকিয়ে দেব। তিনি মস্তানদের ভাষায় কথা বলছেন।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘সিবিআই প্রতিদিন যেভাবে হিসেব চাইছে সেজন্য হয়ত মুখ্যমন্ত্রী মাথা ঠিক রাখতে পারছেন না।’’ কেন মুখ্যমন্ত্রী সিবিআইকে হিসেব দিতে পারছেন না সেই ব্যাখ্যাও দেন সেলিম। তাঁর কথায়, ‘‘গুণ্ডামি করে, তোলাবাজি করে চললে হিসেব দেওয়া যায় না।’’ বামফ্রন্টের অভিযোগ কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার কোথাও মহিলারা নিরাপদে নেই। সেলিম তৃণমূলকে দায়ী করে কংগ্রেসকে এর দায় নিতে হবে বলে দাবি করেন। তবে রাজ্য রাজনীতি, বিজেপিকে আক্রমণের কথা থাকলেও এদিনের সভায় ঘুরে ফিরে এসেছে পুরসভায় পালা বদলের কথা। দলভাঙার প্রসঙ্গ। সেলিমের অভিযোগ, ‘‘জলপাইগুড়িতে তৃণমূল পুরসভার যে চেয়ারম্যানকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল করেছে এখন তাঁর তালুতে বন্দি হয়েছে দল। এদল ওদল থেকে আসা লোকজন এখন তৃণমূলে সর্বময়।’’
প্রদেশ তৃণমূল সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘‘পরাজয় নিশ্চিত জেনেই সেলিম প্রলাপ বকছেন। কোনও দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দলের নেতারা মাথা না ঘামালেও চলবে।’