ঘটনার পাঁচ মাসের মধ্যেই তিন বছরের একটি শিশু কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে সুনীল রাই নামে এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিল আদালত। আসামীকে আশ্রয় দেওয়ায় প্রবাল প্রধান নামে আর এক যুবকের এক বছরের কারাদণ্ড ও এক হাজার টাকার জরিমানার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
বুধবার দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (২) বিচারক শান্তনু মিশ্র ওই রায় দেন। চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল কালিম্পং থানার তিস্তা এলাকার গফরবস্তিতে ঘটনাটি ঘটেছিল। এর পাশাপাশি সুনীলের ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ হয়েছে। এই মামলায় আর এক অভিযুক্ত শম্ভু সুব্বার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিনি বেকসুর খালাস হয়েছেন।
সরকারি আইনজীবী প্রণয় রাই বলেন, “সমতল এলাকার মত পাহাড়ে ফাস্ট ট্র্যাক আদালত নেই। তার পরেও অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে।”
সরকারি আইনজীবী জানান, ঘটনার দিন গফরবস্তিতে এক ছোট্ট রেঁস্তোরার সামনে সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করছিল শিশুটি। তার বাড়ি ওই এলাকাতেই। সুনীল সেই সময়ে রেস্তোঁরাতেই ছিল। সে চকোলেটের লোভ দেখিয়ে একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। সন্ধ্যার পর মেয়েকে না পেয়ে তার পরিবারের লোকজন শিশুটির খোঁজ শুরু করেন। ওই রেেঁস্তারা মালিক-সহ এলাকার কিছু লোকজন তাঁদের জানিয়ে দেন, সুনীলই শিশুটিকে নিয়ে আশেপাশে কোথাও গিয়েছে। এর পরে স্থানীয় ঝোপ থেকে শিশুটির রক্তাক্ত ও অচৈতন্য দেহ মেলে। গ্রামবাসীরা সুনীলের খোঁজ শুরু করেন। এলাকার কয়েকজন একটি বাঁশ ঝোপের ধার দিয়ে সুনীলকে পালাতে দেখেন। তাকে সাজাপ্রাপ্ত প্রবালের বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়। পুলিশের কাছে শিশুটির পরিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে কালিম্পং থানার আইসি অচিন্ত্য গুপ্তের নেতৃত্বে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
ঘটনার পরের দিন প্রবালের বাড়ি থেকে নয়, কালিম্পঙের একটি হোটেল থেকে সুনীলকে গ্রেফতার করা হয়। তার আগে প্রবাল এবং শম্ভুকে গ্রেফতার করা হয়।
এর পরে ৯ জুন আদালতে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। ১৬ জুলাই কালিম্পং আদালত থেকে মামলা দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারকের আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি আইনজীবী জানান, দার্জিলিঙের এই আদালতেই শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলাগুলি চলার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই কালিম্পং থেকে মামলা দার্জিলিঙে পাঠানো হয়। শিশুর পরিবার রাজ্য সরকার, জেলা আইনি সহায়তা কর্তৃপক্ষ এবং সাজাপ্রাপকদের জরিমানার ৮০ শতাংশ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে পাবে।