শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি এলাকায় চা বাগানের জমি অবৈধ ভাবে কেনাবেচার অভিযোগে দলের একজনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে ওই জমি কেলেঙ্কারিতে যুক্ত দলের আরও কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তাদের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে একই ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী তথা দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব। রবিবার শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোড়ে দলীয় কার্যালয়ে ব্লকের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের নিয়ে ওই বৈঠকেই তিনি সে কথা জানিয়ে দেন। সোমবার পর্যটন মন্ত্রী বলেন, ‘‘অবৈধ জমির কারবারে দলের কেউ যুক্ত থাকলে কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না। দল কঠোর ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে বার করে দেওয়া হবে।’’
দলেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগের কমিটির খড়িবাড়ি ব্লক তৃণমূলের সম্পাদক সঞ্জীব বর্মনকে দল থেকে বার করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সভাপতি। সেই সঙ্গে আরও কয়েকজন নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টিও তুলে ধরেছেন। বৈঠকে নকশালবাড়ির এক সময়ের জেলা সভাপতি পরবর্তী জেলা কমটির অন্যতম সম্পাদক পদে থাকা অমর সিংহকে তিনি সতর্ক করে বলেছেন এ ধরনের বিষয়ে যুক্ত থাকার আগে ভেবে দেখতে। কেন না প্রশাসন থেকে যে তদন্ত হচ্ছে তার প্রক্রিয়া ফুরলেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে কিছু করার থাকবে না।
অভিযুক্ত সঞ্জীববাবু বলেন, ‘‘আমার উপর বন্দুক রেখে সবাই পার পেতে চেষ্টা করছে। আমি ওই এলাকায় শুরু থেকে তৃণমূল করছি। গৌতমবাবু যদি মনে করেন আমার জন্য দলের বদনাম হচ্ছে সে জন্য তিনি দল থেকে বার করে দিলে দেবেন। আমি তাতেই খুশি। গৌতমবাবু আদর্শ নিয়েই চলি। সে ভাবেই চলব।’’
গৌতমবাবুর নির্দেশ পেয়েই খড়িবাড়ি ব্লক নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে দ্রুত বৈঠক ডেকে অভিযুক্ত সঞ্জীববাবুকে দল থেকে বার করার প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে জানিয়েছে। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়েও আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জেলা সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন বলে দলেরই একটি সূত্র জানিয়েছে। এ ব্যাপারে তৃণমূলের খড়িবাড়ি ব্লক সভাপতি অরবিন্দ নাথ বলেন, ‘‘মন্ত্রীর নির্দেশ মতো আমরা কাজ করব।’’
অমরবাবু দাবি, তাঁর বদনাম করতে দলের একটা অংশ তাঁকে এর সঙ্গে জড়িয়ে অভিযোগ করতে চাইছে। তিনি এ সবের সঙ্গে যুক্ত নন।’’
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, পানিট্যাঙ্কি এলাকায় সতীশ চন্দ্র টি এস্টেটের ওই জমি অবৈধ ভাবে কেনা বেচার অভিযোগ উঠেছে। চা বাগানের জমি বাগান মালিকদের লিজ চুক্তিতে দেওয়া হয়। তা কখনই কেনাবেচা যায় না। অথচ ওই বাগানের জমি প্লট করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। শাসকদলের সঙ্গে বিরোধী দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশের যোগসাজশে অবৈধ জমির কারবারে যুক্ত হয়ে রয়েছেন বলে অভিযোগ।