শিলিগুড়ির উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহার ফের জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তিতে খুশির হাওয়া উত্তরের ক্রীড়া মহলে। দাবি উঠেছে, তাঁকে জাতীয় একদিনের দলে অন্তর্ভুক্ত করারও। চলতি আইপিএলেও বেশ কিছু ভাল পারফরম্যান্স দেখা গিয়েছে তাঁর ব্যাটে। তা সত্বেও শুধু উইকেটকিপার তকমা দিয়ে দলের বাইরে রাখার মধ্যে পুরনো বঞ্চনার ইতিহাস দেখছেন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার ক্রীড়াপ্রেমীরা। আগামী বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই তাঁকে দলে নেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন তাঁরা। স্নেহের ‘পাপালি’কে ওয়ান-ডে দলে না দেখে আশাহত হয়েছেন তাঁর ছোটবেলার কোচ জয়ন্ত ভৌমিকও। তাঁরও আশা দ্রুত সব দলেই সুযোগ হবে পাপালির।
বিগত বেশ কিছুদিন থেকে পারমফরম্যান্স তেমন আহামরি না হলেও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)-এর বেশ কিছু ম্যাচে একক দক্ষতায় জিতিয়েছেন তিনি। জাতীয় নির্বাচন কমিটি তাঁকে টেস্ট দলে রেখেছেন। তবে তাঁর নিজের শহর শিলিগুড়ির ক্রিকেট মহলের দাবি, নতুন অনেক খেলোয়াড়কে সুযোগ দেওয়া হলেও ঋদ্ধি কেন বঞ্চিত থাকবে? তবে সবার আশা, জিম্বাবোয়ে সফরে সুযোন না পেলেও আপাতত টেস্ট ম্যাচের পারফরম্যান্সকে অবলম্ববন করেই জবাব দিক স্নেহের ‘পাপালি’। যাঁরা ঋদ্ধির সঙ্গে খেলেছেন তাঁরা তো বটেই, যাঁরা খেলেননি বা বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তাঁরাও চান এ বারে অন্তত সব রকম ক্রিকেটে তাঁর জায়গা পাকা হোক। ঘরের ছেলে, হাতে গরম রোল মডেল ঋদ্ধিমানকে সামনে রেখেই উত্তরবঙ্গের ক্রিকেট চাঙ্গা হোক বলে মনে করছেন সকলেই।
কোচবিহারের জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিষ্ণুব্রত বর্মন জানাচ্ছেন, তিনি ছোট থেকেই ঋদ্ধিকে চেনেন। তাঁকে খেলা শিখতে ও বেড়ে উঠতে দেখেছেন। তিনি মনে করেন, দেশের সেরা উইকেটকিপারকে কোনও ফরম্যাটেই বাইরে রাখা উচিত নয়। তাঁর মতে, ‘‘পূর্বাঞ্চল বা বাংলার আরও একটা ডালমিয়া চাই। যিনি এই দাবিগুলি সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় তুলে ধরতে পারবেন।’’ রাজ্য জেলা স্পোর্টস বোর্ডের সচিব তথা দক্ষিণ দিনাজপুর ক্রীড়া সংস্থার সচিব গৌতম গোস্বামীও চান ঋদ্ধিকে সব ফরম্যাটে দলে নেওয়া হোক। তাঁর দাবি, ধীরে ধীরে ঋদ্ধিরও বয়স বাড়ছে। এটাই সঠিক সময় তাঁকে সুযোগ করে দেওয়ার। তিনি মনে করেন, লোকেশ রাহুল বা স্টুয়ার্ট বিনিদের মত খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, অথচ যিনি পরীক্ষিত তাকে নেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘আমার মতে নির্বাচকরা দাবি তুলুক। না হলে ক্ষতি জাতীয় দলেরই।’’ শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ অবশ্য জাতীয় নির্বাচকদের আরও চিন্তাশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘‘আমরা বললেই তো হবে না, কিন্তু অন্তত দাবি তো তুলতেই পারি। এখনই সেরা সময় ঋদ্ধিকে ব্যবহার করার।’’
ঋদ্ধি নিজেও আশাবাদী ছিলেন ওয়ানডে দলে সুযোগ পাবেন বলে। এমনটাই জানিয়েছিলেন বলে দাবি তাঁর ছোটবেলার কোচ জয়ন্তবাবুর। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার হয়নি। তবে পরের কোনও সফরে নিশ্চয় সুযোগ পাবে বলে আশা করছি। যতটুকু সুযোগ পাচ্ছে। ওঁকে মন দিয়ে খেলার পরামর্শ দিয়েছি।’’