Siliguri

দু’টি তারিখ আর প্রেমিকার আটটি ছবি ইনস্টায় পোস্ট, তার পরেই চরম সিদ্ধান্ত শিলিগুড়ির যুবকের!

বন্ধুদের দাবি, এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাঁর। সেই সম্পর্ক সম্প্রতি ভেঙে গিয়েছিল। কারণ, মেয়েটির পরিবার সাহিলকে মেনে নেয়নি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:২৬
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

যুবকের ভাবগতিক দেখে কয়েক দিন ধরেই সন্দেহ হচ্ছিল বন্ধুদের। এ নিয়ে তাঁরা কথাও বলেছিলেন যুবকের সঙ্গে। দুম করে কোনও ভুল সিদ্ধান্ত যাতে না নেন, তার জন্য পইপই বোঝানোও হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সব চেষ্টাই বিফলে গেল! বৃহস্পতিবার সেই যুবকের দেহ উদ্ধার হল শিলিগুড়িতে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম সাহিল মজুমদার (২৬)। তিনি অরবিন্দপল্লির বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ বহুতল আবাসনের ঘর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। বন্ধুমহলের দাবি, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়েই আত্মহত্যা করেছেন সাহিল। দেহ উদ্ধারের পর তাঁর ইনস্টাগ্রামের প্রোফাইল থেকে দু’টি তারিখ পাওয়া গিয়েছে। ইনস্টা বায়োতে লেখা, ‘‘হর হর মহাদেব ২২-০৬-৯৭ থেকে ১১-০১-২৪।’’ বন্ধুরা জানাচ্ছেন, প্রথমটি সাহিলের জন্ম তারিখ। আর দ্বিতীয়টি তাঁর মৃত্যুদিন! এর সঙ্গে নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে এক তরুণীর আটটি ছবিও পোস্ট করেছেন সাহিল। বন্ধুদের দাবি, ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাঁর। সেই সম্পর্ক সম্প্রতি ভেঙে গিয়েছিল। কারণ, মেয়েটির পরিবার সাহিলকে মেনে নেয়নি। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন যুবক।

বহুতল আবাসনের ফ্ল্যাট ছাড়াও অরবিন্দপল্লি এলাকায় আর একটি বাড়ি রয়েছে সাহিলের। যুবকের পরিবারের লোকেরা সেখানেই থাকেন। পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার রাতে ছাদের দরজা খুলে দেওয়াল টপকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন সাহিল। সকালে তাঁকে বাড়িতে দেখতে না পেয়ে ফোন করা হয়। সাহিল জানান, তিনি এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে উঠেছেন। এর পর থেকে যুবকের সঙ্গে আর কোনও ভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। পরে দুপুরের দিকে অরবিন্দপল্লির ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। সন্দেহ হওয়ায় দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই উদ্ধার হয় সাহিলের নিথর দেহ। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। যুবকের দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

Advertisement

সাহিলের বাবা সুব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘একটি মেয়েকে নিয়ে কয়েক দিন ধরেই বিধ্বস্ত ছিল। ওর বন্ধুবান্ধবের মুখেও একই কথা শুনেছি। ওদেরকে নাকি আগেও সুইসাইডের কথা বলেছে। অরবিন্দপল্লির ফ্ল্যাটটা খালিই পড়ে থাকে। আমার শাশুড়ি এখানে শাড়ির ব্যবসা করেন। সেই জন্যই দুপুর নাগাদ ফ্ল্যাটে আসা। তখনই ছেলের দেহ উদ্ধার হয়।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, সাহিলের বন্ধুবান্ধবদের বয়ান সংগ্রহ করা হচ্ছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যিই প্রেমঘটিত বিষয় না কি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ, দেখা হচ্ছে তা। সাহিলের বন্ধু সুপ্রভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গতকাল রাত পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই ছিল। একটি বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও আসে। আমিই রাতে ওকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে যাই। বিচ্ছেদের পর থেকেই ভীষণ ভেঙে পড়েছিল। গতকাল ভোর প্রায় ৪টে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। ওকে বোঝাই, যাতে কোনও ভুল কাজ না করে। ইনস্টাগ্রাম থেকে আমাদের সকলকে ব্লক করে দিয়েছে। সে জন্য এই ধরনের লেখাও আমাদের চোখে পড়েনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন