মশা নিধনে চলছে স্প্রে।
অতি মাত্রায় সতর্ক না থাকলে এবারও শিলিগুড়িতে ফের থাবা বসাতে পারে ডেঙ্গি। পুরসভার বাড়ি বাড়ি সমীক্ষায় উঠে এসেছে তেমনই তথ্য। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা মেনে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে প্রতি মাসে দু’বার করে পুর এলাকায় পর্যায়ক্রমে ওই সমীক্ষা চলছে। জুন মাসের সমীক্ষায় ১৫১টি এবং জুলাই মাসের সমীক্ষায় ৩২৭টি জায়গা থেকে মিলেছে ডেঙ্গির লার্ভা। পুরসভার দাবি, ওই লার্ভা নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু যে এলাকায় তা মিলেছে, সেখানকার বাসিন্দাদের বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। কিন্তু, পুরসভার পক্ষ থেকে ওই সব এলাকায় বাড়তি প্রচার করা হয়নি বলে বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন।
পুরসভার রিপোর্ট অনুসারে, মে থেকে জুলাই পর্যন্ত তিন মাসের সমীক্ষায় পুর এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে মোট ৮১৭টি পাত্রে পাওয়া গিয়েছে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার লার্ভা। পুরসভার ৪, ১৬, ১৭, ২৬ ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডগুলি থেকে বেশি করে লার্ভা পাওয়া গিয়েছে বলেই পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সমীক্ষা রিপোর্ট সামনে আসার পরই তৎপরতা বাড়িয়েছে পুরসভা। শহরজুড়ে শুরু হয়েছে সচেতনতামূলক প্রচার। ডেঙ্গি মোকাবিলায় তৈরি হয়েছে ‘পতঙ্গবাহিত রোগ প্রতিরোধ দল’। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা ২৪ ঘণ্টা নজর রাখছি। ডেঙ্গি মোকাবিলায় যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করা হচ্ছে। অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে প্রতিটি নাগরিকদের সচেতন হতে হবে।’’
পুরসভার রিপোর্ট অনুসারে জুলাই মাসে শেষ দফায় যে সমীক্ষা হয়েছে, তাতে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার ৪৫৫ টি বাড়িতে গিয়েছিল পুরসভার সমীক্ষক দল। তাতে মোট ৩২৮ জন জ্বরের রোগীর হদিশ মিলেছে। তাদের মধ্যে ১০ জন রোগীর গায়ে ব্যথা ছিল। তাদের রক্ত পরীক্ষার করা হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে।
যদিও গত কয়েক মাসে শহরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়া বা মৃত্যুর কোন খবর তাদের কাছে নেই বলেই জানিয়েছেন দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। যেসব এলাকায় ডেঙ্গির লার্ভা পাওয়া গিয়েছে সেই সব এলাকার কাউন্সিলর, স্থাস্থ্য কর্মী, বরো চেয়ারম্যানদেরও সতর্ক করেছে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। চিহ্নিত লার্ভাগুলি সঙ্গে সঙ্গে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা।
ইতিমধ্যেই মশার লার্ভা নষ্ট করার জন্য তেল স্প্রে করার কাজে ১০ হাজারের বেশি জনসংখ্যাবিশিষ্ট ওয়ার্ডে তিন জন এবং ১০ হাজারের কম জনসংখ্যাবিশিষ্ট ওয়ার্ডে দু’জন করে কর্মী নিয়োগ করেছে পুরসভা। বস্তি এলাকাগুলিতে নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য কর্মীদের। সচেতনতার প্রচারে মাঠে নামানো হয়েছে একাধিক এনজিওকে।
দার্জিলিংয়ের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে আমরা নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছি। শিলিগুড়ি পুরসভার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা হচ্ছে।’’