খোঁজ চলছে অভিযুক্তের

মোবাইল ধাওয়া করে ভুটান সীমান্তে পুলিশ

মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান জেনে মনোজ শর্মা খুনে অভিযুক্ত যুবককে খুঁজতে ভুটান সীমান্তে গিয়েছে শিলিগুড়ি পুলিশের দল। রাত পর্যন্ত মূল অভিযুক্তের খোঁজ পায়নি পুলিশ। তবে ভূটান লাগোয়া এলাকা থেকে এক সন্দেহভাজনককে আটক করেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৫৭
Share:

মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান জেনে মনোজ শর্মা খুনে অভিযুক্ত যুবককে খুঁজতে ভুটান সীমান্তে গিয়েছে শিলিগুড়ি পুলিশের দল। রাত পর্যন্ত মূল অভিযুক্তের খোঁজ পায়নি পুলিশ। তবে ভূটান লাগোয়া এলাকা থেকে এক সন্দেহভাজনককে আটক করেছে পুলিশ। তার পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।

Advertisement

গত শনিবার সকালে নিজের গ্যারাজ থেকেই উদ্ধার হয় প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর শর্মিলাদেবীর স্বামী মনোজবাবুর দেহ। সে দিন থেকেই খোঁজ মিলছে না গ্যারাজে সদ্য নিযুক্ত চৌকিদারের। আগের রাতে গ্যারাজের ঘরেই মদ্যপানের আসর বসেছিল বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পারে। সে সময় চৌকাদার যুবক এবং মনোজবাবু দু’জনেরই উপস্থিত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ মনে করছে, মদের আসর শেষ হওয়ার পরে চৌকিদারই মনোজবাবুকে খুন করে তাঁর স্কুটি সহ নগদ টাকা, সোনার চেন আঙ্‌টি নিয়ে পালায়। পুলিশের দাবি, মূল অভিযুক্ত চৌকিদার যুবকের বিষয়ে বেশ কিছু সূত্র মিলেছে। দ্রুত তাকে ধরা সম্ভব হবে।

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘তদন্তের স্বার্থে এখনই বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে অভিযুক্ত কোথায় রয়েছে, তার কিছু তথ্য মিলেছে। সেগুলি যাচাই করে
দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

গত শুক্রবার রাত বারোটা পর্যন্ত মনোজবাবু বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন আত্মীয়েরা মোবাইলে ফোন করেন। মনোজবাবুর মোবাইলে ফোন তুলেছিল সদ্য নিযুক্ত ওই চৌকিদারই। সে দাবি করেছিল, মনোজবাবু অতিরিক্ত নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ায় কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। তারা জলপাইগুড়িতে রয়েছে বলেও সে দাবি করে।

পরিবারের সদস্যরা রাতেই গ্যারাজে খুঁজতে এসে বাইরে থেকে তালা লাগানো দেখতে পান। সকালে ওই গ্যারাজ থেকেই মনোজবাবুর দেহ উদ্ধার করে।

অভিযুক্তের পরে মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান দেখে পুলিশ জানতে পারে, খুনের পরে জলপাইগুড়ি হয়ে সে বানারহাটে পালিয়ে যায়। শনিবার ভোরের পর থেকে মোবাইলটি বন্ধ করে দেয় অভিযুক্ত। শনিবার গভীর রাতে ফের মোবাইল খোলে। সিমও বদলে নেয়। রবিবার শেষ তার অবস্থান জয়গাঁ এলাকায় পাওয়া গিয়েছে। জয়গাঁ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন পরিবারের সদস্যরা। মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান দেখে শিলিগুড়ি পুলিশের একটি দল এ দিন সকালে ডুয়ার্সে রওনা দিয়েছে।

মনোজবাবুর স্ত্রী শর্মিলাদেবী সহ পরিবারের সদস্যরাও ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় অভিযুক্তের খোঁজ করছেন। অভিযুক্ত যুবক নিজের যে ঠিকানা দিয়েছিল, সেগুলিতে খোঁজ চালাচ্ছেন তাঁরা। এ দিকে, এ দিন জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের একটি দল শর্মিলাদেবীর
বাড়িতে যান।

ভক্তিনগর থানায় গিয়েও দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার দাবি করেছেন। জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার, বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা সহ অন্য নেতারা সেই দলে ছিলেন বলে জানানো হয়েছে।

শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘দ্রুত অভিযুক্ত গ্রেফতার না হলে এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটবে না। শহরের কোথায় কে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে, তা পুলিশকে জানতে হবে। না হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি কিছুতেই আটকানো যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন