জয়ী ভিএনসি-র খেলায়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন সুভাষ ভৌমিক। ছবি : বিশ্বরূপ বসাক।
দর্শক ঠাসা মাঠে উত্তেজনা পূর্ণ ফাইনালে মাটিগাড়ার মায়াদেবী ক্লাবকে হারিয়ে দিল শিলিগুড়ির বিবেকানন্দ ক্লাব (ভিএনসি)। সূর্যনগর ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন পরিচালিত ওই নক আউট ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিত্যানন্দ সাহা স্মৃতি পুরস্কার পেল ভিএনসি। রবিবার সূর্যনগর মিউনিসিপ্যালটি মাঠে ফাইনালে তারা ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে মায়াদেবী ক্লাবকে। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর কিছুক্ষণ পরে ফাইনালের একমাত্র গোলটি করেন ভিএনসি’র ফুটবলার আফজল আনসারি। ভিনসি’র ফুটবলার কর্নার কিক তুলতেই মায়াদেবীর গোলের সামনে জটলা সৃষ্টি হয়। গোলকিপার কিছুটা এগিয়ে এসেছিলেন। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি আফজল। তাঁর মাথা ছুঁয়ে বল জড়িয়ে যায় মায়াদেবীর গোলে।
রানার্স দল মায়াদেবী কনকলতা সাহা স্মৃতি পুরস্কার পেল। তবে এ দিন ফাইনাল নজর কেড়েছে দর্শকের ভিড়। স্টেডিয়াম বা গ্যালারি ছাড়া মাঠে খেলা দেখতে ভিড় এখনকার ফুটবলে বা়ড়তি মাত্রা যোগ করছে। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দশর্কের ভিড় জমেছিল খেলা দেখতে। তবে ফাইনালে রেকর্ড ভিড় হয়েছে সূর্যনগরের মাঠে। দর্শক ছিল ২০ হাজারের কাছাকাছি। যা সামলাতে পুলিশ থেকে শুরু করে কর্মকর্তাদেরও বেগ পেতে হয়েছে।
এ দিন ফাইনালে শুরু থেকেই উত্তেজনা ছিল। মাঠে ব্যান্ডপার্টি নিয়ে হাজির ছিল মাটিগাড়া মায়াদেবীর সমর্থকেরা। প্রথমার্ধে কোনও পক্ষ গোল করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে ভিএনসি গোল পেতেই মাঠের বাইরে সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে হইচই হচ্ছিল। মায়াদেবীর এক ফুটবলার মাঠের ধারে বল নিতে গেলে ভিএনসি’র সমর্থকদের একাংশ তাঁর দিকে তেড়ে যায় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে উভয়পক্ষের ফুটবলারদের মধ্যেও উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর মায়াদেবীর ক্লাবের এক ফুটবলারকে রেফারি লালকার্ড দেখালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়ে লোকজন। মায়াদেবী ক্লাবের কর্মকর্তারাও রেফারির ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। খেলা শেষের আট মিনিট আগে ফুটবলারদের তাঁরা খেলতে নিষেধ করলে তাঁরা মাঠের বাইরে চলে আসেন। খেলা বন্ধ হয়ে পড়ে। এরপর কর্মকর্তারা তাঁদের বুঝিয়ে মিনিট পনেরো পরে মাঠে নামালে ফের খেলা শুরু হয়।
এ দিন মাঠে অতিথি হিসাবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কোচ সুভাষ ভৌমিক, অর্জুন মান্তু ঘোষরা। খেলার শেষের দিকে যান জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবও। তাঁদের হাত দিয়ে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক ভিএনসি’র শুভম বিশ্বাস। ম্যান অব দ্য ম্যাচ সম্মান পেলেন লাকি এজিফোর। ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট সম্মান পেলেন মায়াদেবী ক্লাবের গর্ডউইন। টুর্নামেন্টের সেরা গোলদাতা বাঘাযতীন ক্লাবের রণদেব দাস। আয়োজক কমিটির সম্পাদক তথা মাঠটি যে ওয়ার্ডে সেখানকার কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, ‘‘প্রথম বছর যে সাড়া মিলেছে তাতে আমরা খুশি।’’ পরের বছর থেকে আরও বড় আয়োজন করা হবে।