দাদাকে এ ভাবে হারাব ভাবিনি

পেশায় রাজমিস্ত্রি হলেও ইদানিং সে কাজ আর খুব একটা করছিলেন না। কিন্তু বাড়ির কাছাকাছি একটি নির্মাণ কাজ পাওয়ায় সেটা ছাড়েননি। ওই বাড়ির নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে এ দিন ভূমিকম্পে মংলু রায়ের মৃত্যুর পর এখন তা নিয়েই আফসোস করছেন পরিবারের লোকেরা। রাজগঞ্জ ব্লকের ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা মংলুর এক ছেলে স্কুলে পড়াশোনা করছে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ভাই ছবিবাবু বলেন, ‘‘রাজমিস্ত্রির কাজ এখন আর করছিলেন না দাদা। পাড়ার কাছে একটি বাড়ি তৈরির কাজের জন্য বলায় সেই কাজটা করছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৩
Share:

জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে দেওয়াল ভেঙে মৃত শ্রমিকের শোকার্ত পরিজনেরা। শনিবার ছবিটি তুলেছেন সন্দীপ পাল।

পেশায় রাজমিস্ত্রি হলেও ইদানিং সে কাজ আর খুব একটা করছিলেন না। কিন্তু বাড়ির কাছাকাছি একটি নির্মাণ কাজ পাওয়ায় সেটা ছাড়েননি। ওই বাড়ির নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে এ দিন ভূমিকম্পে মংলু রায়ের মৃত্যুর পর এখন তা নিয়েই আফসোস করছেন পরিবারের লোকেরা।

Advertisement

রাজগঞ্জ ব্লকের ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা মংলুর এক ছেলে স্কুলে পড়াশোনা করছে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ভাই ছবিবাবু বলেন, ‘‘রাজমিস্ত্রির কাজ এখন আর করছিলেন না দাদা। পাড়ার কাছে একটি বাড়ি তৈরির কাজের জন্য বলায় সেই কাজটা করছিলেন। এ দিন ভূমিকম্পের সময় কাজ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন। সে সময় তিন তলার ছাদ ঘেরা দিতে যে দেওয়াল করা হয়েছিল তা ভেঙে পড়ে দাদার মাথায়। দাদাকে এ ভাবে হারাতে হবে ভাবিনি।’’

এ দিন ঘটনার পর তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর এ দিন পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মংলুর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবারের লোকেরা।

Advertisement

অন্য দিকে শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির বাসিন্দা এক গৃহবধূও রূপবান খাতুন এ দিন ভূমিকম্পের সময় বাড়ির দেওয়াল ভেঙে মারা যান। নকশালবাড়ির ছোট মণিরাম জোতে তাঁর বাড়ি। ঘটনার খবর পেয়ে ভোট মিটতেই এলাকায় গিয়ে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সহমর্মিতা জানান। বিধায়ক হিসেবে মৃতের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে স্বামী, ছেলেমেয়ের সঙ্গেই এ দিন ছিলেন। ভূমিকম্পের সময় তিনি প্রথমে হকচকিয়ে যান। বাড়ির লোকে হুটোপুটি করে বার হন।

রূপবান খাতুনও সে সময় বাইরে বার হতে গেলে জানলার কার্নিশ-সহ বাড়ির একদিকের দেওয়াল তাঁর উপর ভেঙে পড়লে তিনি ঘটনালস্থলেই মারা যান। বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। খবর পেয়েই ভোটের পর এলাকা গিয়েছি। মৃতের পরিবারের পাশে থাকার কথা জানিয়েছি। তাদের পরিবারকে কিছু আর্থিক সাহায্য করেছি।’’

এ দিন ঘটনার পর রূপবান দেবীর মৃত্যুর খবর নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয় প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে। কেন না স্থানীয় নকশালবাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জন্য মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করাতে বলা হয়। তা শুনেই তা মৃতদেহ নিয়ে সেখান থেকে পরিবারের লোকেরা নয়ে চলে যান বলে অভিয়োগ। বিডিও কিংশুক মাইতি এ দিন নিবার্চনের কাছে শিলিগুড়িতে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন