গ্রেফতার: নিয়ে আসা হচ্ছে অভিযুক্তদের। ফাইল চিত্র
দলেরই প্রাক্তন ব্লক সভাপতি ছুরিকাহত হওয়ার ঘটনায় ছ’জন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে মেখলিগঞ্জ থানার চ্যাংরাবান্ধা-সহ একাধিক এলাকা থেকে তাদের ধরা হয়।
ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের মেখলিগঞ্জ ব্লকের বর্তমান সভাপতি তপন দামের ভাই টোটোন দাম। এ ছাড়াও গোপাল নন্দী, রফিকুল ইসলাম-সহ আরও পাঁচজন তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। তপনবাবুকে ওই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত। জখম প্রাক্তন ব্লক সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত সরকার নিজেই তপনবাবুর বিরুদ্ধে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন। লক্ষ্মী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “ছ’জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
কালীপুজোর সন্ধ্যায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয় বর্মনের সঙ্গে কে থাকবেন তা নিয়েই তৃণমূলের ওই দুই নেতা বচসায় জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। প্রথমে তপনবাবু সাংসদের সঙ্গে ছিলেন। একটি উদ্বোধন সেরে আরেক আরেক জায়গায় যাওয়ার সময় সাংসদের গাড়িতে ওঠেন লক্ষ্মীবাবু। সেই সময় তাঁকে ওই গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় লক্ষ্মীবাবু চিৎকার শুরু করলে সাংসদ গাড়ি থেকে নেমে পুলিশ ডাকেন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। লক্ষ্মীবাবুর অনুগামীদের অভিযোগ, ঘটনার সময়, এমনকী সাংসদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও কোনও পুলিশকর্মী ছিলেন না। আক্রান্ত হতে পারে লক্ষ্মীবাবু নিজে বহুবার থানার এক পুলিশ অফিসারকে ফোন করলেও কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাহলে এমন ঘটনা এড়ানো যেত বলে তৃণমূল কর্মীদের দাবি।
পুলিশের এক কর্তা অবশ্য জানিয়েছেন, লক্ষ্মীবাবু এবং তপনবাবুর বিরোধ মেখলিগঞ্জে কারও অজানা নয়। কিন্তু সাংসদের সামনেই তাঁরা বচসায় জড়িয়ে পড়বে তা পুলিশ আঁচ করতে পারেনি। শুধু পুলিশ নয়, দলের তরফেও ওই ঘটনা নিয়ে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন নিচুতলার কর্মীরা। তাঁদের কয়েকজন বলেন, “প্রকাশ্যে যে ভাবে তৃণমূল নেতারা ধারাল অস্ত্র নিয়ে বচসায় জড়ালেন সেখানে অন্য মানুষের নিরাপত্তা কোথায়! অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে কেন দলীয় নেতৃত্ব দেরি করছে তা বুঝতে পারছি না।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “দলীয় স্তরে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন আইনের পথে চলবে।”