ছিল ৪০, হয়েছে ৫

বাইকের কাটতি বাড়ছে না-বলে ওই সমস্ত বিভিন্ন শোরুমের মালিক, কর্মীদের একাংশের আক্ষেপ। মন্দার বাজারে চার চাকার ছোটগাড়ির বিক্রি যেমন তলানিতে তেমনই ঝটকা লেগেছে দুই চাকার গাড়ির কাটতিতেও। 

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেউ ঘোষণা করেছে তাদের কোম্পানির আগের পুরনো বাইক থাকলে এবং নথি দেখালে ‘লয়ালিটি’ ছাড় দেড় হাজার টাকা মিলবে। কোনও শো-রুম সরকারি শিক্ষকদের জন্য ছাড় দিচ্ছে। কেউ নতুন বাইকের সঙ্গে পুরো ট্যাঙ্ক ভর্তি পেট্রল বা হেলমেট দিচ্ছে নিখচায়। কেউ নতুন বাইকের সঙ্গে স্ক্র্যাচ কার্ডে নানা উপহার দিচ্ছে।

Advertisement

কিন্তু তাতে কী?

বাইকের কাটতি বাড়ছে না-বলে ওই সমস্ত বিভিন্ন শোরুমের মালিক, কর্মীদের একাংশের আক্ষেপ। মন্দার বাজারে চার চাকার ছোটগাড়ির বিক্রি যেমন তলানিতে তেমনই ঝটকা লেগেছে দুই চাকার গাড়ির কাটতিতেও।

Advertisement

গত কয়েক মাসে দুই চাকার গাড়ি বিক্রির বাজারও বেনজির ভাবে পড়েছে উত্তরবঙ্গে। তার মধ্যে পুজোর এই সময়টা বাইক বিক্রির অন্যতম মরসুম বলে ধরে শিলিগুড়িতে থাকা বাইকের ডিলারদের শোরুমগুলো। তরুণ প্রজন্ম বাইক কিনতে এ সময় ঝোঁকে। অথচ এখনই বাজারের পরিস্থিতি যেন শুকনো, খটখটে মরুভূমির মতো। বাজার চাঙ্গা করতে বিভিন্ন শোরুম বিভিন্ন ছাড় দিয়ে বিক্রির পরিস্থিতি তেজি রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করলেও তাই লাভ হচ্ছে না বলে দাবি।

দেশের নামকরা জনপ্রিয় বাইক প্রস্তুতকারী সংস্থা কয়েক বছর আগে ভেঙে দুটো কোম্পানি তৈরি হয়েছে। প্রথমটির শিলিগুড়ির সেবক রোডে একটি শোরুমের মালিক অভিষেক জৈনের কথায়, ‘‘কী পরিস্থিতি লুকিয়ে লাভ নেই। বাজারে গত দু’ মাসের বেশি সময় ধরে বাইকের বিক্রি ৩০-৩৫ শতাংশ কমেছে। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি মিলিয়ে এই কোম্পানির অন্তত ৩ জন ডিলার রয়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতে তাদের সাব-ডিলার রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জেনেছি সবারই কমবেশি একই পরিস্থিতি।’’ ওই কোম্পানির বর্ধমান রোডের শোরুমের দাবি, এক সময় প্রতিদিন ৪০-৫০টি বাইক বিক্রি-ও হত। গত কয়েক বছরে তা কমেছে। এখন তো কোনও দিন ৫/৬ টি বাইক বিক্রি হচ্ছে অনেক কষ্টে।

লয়্যালটি ছাড়, পুরনো বাইক বদল করে নতুন গাড়ি কিনতে আগ্রহীদের জন্য ছাড়, সরকারি শিক্ষকদের ছাড় দিচ্ছিলেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি। দ্বিতীয় কোম্পানির সেবক রোডের শো-রুমের মার্কেটিং ম্যানেজার রমেশ সিংহ জানান, প্রতি বছর তাঁদের বিক্রির হার ৩০ শতাংশের মতো বৃদ্ধি ঘটে। এবছর সেটা নেই। আগের বিক্রি ধরে রাখতে অনেক ঘাম ঝড়াতে হচ্ছে। শিলিগুড়িতে তাদের অন্য শোরুমগুলোর বিক্রি অনেক কমেছে বলে জানতে পেরেছেন।

সেবক রোডে পুরনো একটি বাইক কোম্পানির শোরুমের বিপণনের দায়িত্বে থাকা সমীর সাহা জানান, ৫০ শতাংশ বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। দার্জিলিং, সিকিম, ডালখোলা, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, বীরপাড়ার মতো অনেক শহরে তাদের সাব ডিলার রয়েছে। সব মিলে গত বছর সেপ্টেম্বরে ৫০০ বাইক বিক্রি ছিল। এ বছর সেপ্টেম্বরে গত ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৫০-র কাছাকাছি। অপর একটি বাইক কোম্পানির বর্ধমান রোডের শোরুমের ম্যানেজার সুদীপ্ত দাসের কথায়, গত বছর সেপ্টেম্বর অক্টোবর মিলিয়ে সাড়ে ৭৫০ বাইক বিক্রি হয়েছিল। এ বছর সেপ্টেম্বরে এখনও ৫০ টি গাড়ি বিক্রি নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন