ভাঙনের আতঙ্ক ঘুম কেড়েছে ঘরঘরিয়ার

প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও বাঁধের ব্যবস্থা হয়নি। তাই বর্ষায় চোখের সামনে বসত, জমি, নদীতে তলিয়ে যেতে দেখা ছাড়া উপায় নেই বাসিন্দাদের। এমনকি যাতায়াতের রাস্তাও ভাঙনের মুখে। আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের ঘরঘরিয়া এলাকায় পশ্চিম টারি গ্রামে প্রতি বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠে চোপারো নদী। এ বারও বছরভর শান্ত থাকা চোপারো নদী বর্ষা আসতেই এলাকার বাসিন্দাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।

Advertisement

নারায়ণ দে

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৫ ০১:৪২
Share:

এ ভাবেই ভাঙছে পাড়। —নিজস্ব চিত্র।

প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও বাঁধের ব্যবস্থা হয়নি। তাই বর্ষায় চোখের সামনে বসত, জমি, নদীতে তলিয়ে যেতে দেখা ছাড়া উপায় নেই বাসিন্দাদের। এমনকি যাতায়াতের রাস্তাও ভাঙনের মুখে। আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের ঘরঘরিয়া এলাকায় পশ্চিম টারি গ্রামে প্রতি বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠে চোপারো নদী। এ বারও বছরভর শান্ত থাকা চোপারো নদী বর্ষা আসতেই এলাকার বাসিন্দাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
তপসিখাতা গ্রামপঞ্চায়েতের আরএসপির প্রধান অনিমা রায় বলেন, “নদী বাঁধ দেওয়ার ক্ষমতা গ্রামপঞ্চায়েতের নেই। বিষয়টি ব্লক আধিকারিকদের জানিয়েছি। কিন্তু পশ্চিমটারি এলাকায় যাতায়াতের রাস্তা থেকে শুরু করে মানুষের ভিটে জমি নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত।” কালচিনি ব্লকের বিডিও অনিন্দিতা দে বলেন, “ বিষয়টি সেচ দফতরের দেখার কথা। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলব।”
আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের ঘরঘরিয়া গ্রামে ছোট নদী চোপারো। কিছু দূরে গিয়ে নাম পাল্টে সেখানে নাম হয়েছে ঘরঘরিয়া। সেখানেও অষ্টমীর পাটে ভাঙন হচ্ছে বলে জানান তৃনমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি মনোরঞ্জন দে। তিনি বলেন, “বর্ষায় ভয়ঙ্কর আকার নেয় চোপারো বা ঘরঘরিয়া। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ব্লকে জানিয়েও কোন সুবিধে পাননি।”

Advertisement

পশ্চিম টারি গ্রামে নদীর ভাঙন দেখাচ্ছেন বাসিন্দা। —নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় গিয়ে দেখা গেল এক সময়ের মাটির চওড়া রাস্তা নদী ভাঙনে সরু আলের মতো দেখাচ্ছে। সেই সরু রাস্তাতেও ধাক্কা মারছে অশান্ত নদী। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে গ্রামের ছেলে বুড়ো সকলকে। এলাকার বাসিন্দা যামিনী রায় জানান, বর্ষায় নদী ভয়াল আকার নেয়। এলাকায় কোনও বাঁধ নেই। পাহাড়ে বা সমতলে টানা বৃষ্টি হলে নদীর জল উপচে এলাকায় ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়ে। তখন কার্যত বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, ‘‘বার বার বিডিও অফিস থেকে আধিকারিকরা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বর্ষার সময় আমাদের কার্যত রাত জাগতে হয়। কখন নদীর জল উপচে গ্রামে ঢোকে বা ভাঙনে বাড়ি ঘর তলিয়ে যায়।’’ এলাকার কৃষক গোপাল দাস বলেন, ‘‘প্রতিবছর নদী ভাঙনে কৃষি জমি তলিয়ে যাচ্ছে নদীর গর্ভে। বছর তিনেক আগে নদী ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি দূরে সরিয়ে নিয়ে আসি। এবছর বর্ষায় নদী ভাঙনে বাঁশ ঝাড় থেকে শুরু বেশ কয়েক বিঘা জমি নদী ভাঙনে চোখের সামনে তলিয়ে যেতে দেখলাম। এভাবে নদীতে কৃষি জমি যেতে থাকলে আমাদের পথে বসতে হবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন