বাহান্ন দিন কেটে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রেল যোগাযোগ এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। রেলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখনও ৩১টি ট্রেন বাতিল হয়ে রয়েছে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে সেগুলোর চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদিও সংশয় বাড়িয়েছে রেলেরই সিদ্ধান্ত। উত্তরবঙ্গে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকারগুলোর পুরোনো লাইন তুলে নতুন করে পাতা হবে। তেলতা সেতুর লাইনও এই তালিকায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আজ বুধবার থেকেই এই কাজ শুরু হওয়ার কথা। তার জন্য বর্তমানে চলতে থাকা কয়েকটি ট্রেনও বাতিল করতে হবে বলে খবর। সে ক্ষেত্রে যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে কতদিন লাগবে তা নিয়েই অনিশ্চয়তা রয়েছে।
এ দিন রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যাত্রী নিরাপত্তাকে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের উপরে রাখতে হবে। নতুন নির্দেশিকায় এমনই বলা হয়েছে। সে কারণেই নতুন লাইন পাতা-সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’
বন্যা পরিস্থিতির জেরে জুলাই মাস থেকেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অংশের রেলপথে ক্ষয়ক্ষতি হতে শুরু করে। অগস্টে তেলতা নদীর জলে মালদহ এবং সুধানি স্টেশনের মাঝে বিহারের একটি রেলসেতুর দু’দিকের লাইনের নীচে মাটি ভেসে যায়। শূন্যে ঝুলতে থাকে রেল পথ। ১৩ অগস্ট থেকে বাতিল হয়ে যায় দক্ষিণবঙ্গ এবং দেশের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে যোগাযোগকারী ১৫৩টি ট্রেন। পুজোর আগে দার্জিলিং মেল-পদাতিক সহ বেশ কিছু ট্রেন চলাচল শুরু করলেও, শতাব্দী এক্সপ্রেস, তিস্তা তোর্সা, উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস-সহ একাধিক ট্রেন চলাচল বাতিল হয়ে রয়েছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, তেলতা সেতু সংস্কার করে তার ওপর দিয়ে ট্রেন চালানো হচ্ছে। তাতে মোটামুটি ভাবে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে শুরু হয়েছিল। যদিও সাম্প্রতিক সমীক্ষা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, পুরনো লাইনেও বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার ফলে সেগুলো পুরোপুরি বদলে দিতে হবে।
পুজোর ছুটিতে জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতা হয়ে উত্তর ভারতে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল ৩৫ জনের একটি দলের। সেই দলের সদস্য অনিরূদ্ধ কর্মকারের কথায়, ‘‘লক্ষ্মীপুজোর পরেরদিন উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে টিকিট। এখন কোনও ট্রেন-বাসে এতজনের টিকিট জোগাড় করতে পারছি না। মনে হচ্ছে পুরো পরিকল্পনাটাই মাঠে মারা যাবে।’’ রেলের কোনও কর্তাই আশ্বাস দিতে পারেনি। সূত্রের খবর, আরও একটি সমীক্ষা চলছে। সেই সঙ্গে তেলতা সহ কিসানগঞ্জের পুরোনো লাইন তুলে ফেলার কাজ আপাতত স্থগিত রাখার একটি বিকল্প প্রস্তাবও এসেছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্য নেবে রেল বোর্ডই।