প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিছু দিন আগেই। কোন দলে যোগ দিতে চলেছেন করিম তা নিয়েই জল্পনা তুঙ্গে ইসলামপুর শহরে। তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না ইসলামপুর শহরের বাসিন্দারা।
প্রাক্তন মন্ত্রী করিম চৌধুরী ৯ বারের বিধায়ক। এক বার রাজ্যের মন্ত্রী হিসেবেও ছিলেন তিনি। প্রায় ৫১ বছর ধরেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। তিনি তৃণমূল ছেড়ে কোন দলে যোগ দিচ্ছেন, তা এখনও খোলসা করেননি। করিম ঘনিষ্ট মহলের দাবি, কংগ্রেস সহ অনেকেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। করিম অবশ্য বলেন, ‘‘২৪ ফেব্রুয়ারি ইসলামপুরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের পার্টি অফিসে একটি সংবাদিক বৈঠক করে সমস্ত কিছুই প্রকাশ করব। কাজেই এলাকার মানুষ জানতে পারবেন।’’
বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি নির্মল দামের কথায়, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে বলতে পারি উনি দলে যোগ দিলে ভাল নেতা পাব। উনি দলে আসলে দলের বিষয় তাঁকে নতুন করে রপ্ত করতে হবে।’’ তবে বিজেপির জেলা সভাপতি আরও বলেন, ‘‘করিম চৌধুরীর সঙ্গে আমাদের এখনও যোগাযোগ হয়নি। রাজ্য নেতৃত্ব যোগাযোগ করে থাকলে বিষয়টি নিয়ে জেলা ও ইসলামপুর শহর কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই সেই সিদ্ধান্ত রাজ্যে পাঠানো হবে। তবে ওঁর মতো একজন ব্যক্তিত্বকে আমাদের দলে সব সময় স্বাগত জানাই।’’
বিধানসভা নির্বাচনে প্রাক্তন মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরীকে হারিয়ে ইসলামপুরের সিপিএম-এর একাংশের সমর্থন নিয়েই জোটের পক্ষের বিধায়ক হন ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কংগ্রেসের কানাইয়ালাল অগ্রবাল। যদিও প্রাক্তন মন্ত্রীকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে বসান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। কিছু দিনের মধ্যেই দল পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের পরই কানাইয়ালাল অগ্রবালকে দলের নেওয়ার বিষয়ে বিরোধিতা করেন প্রাক্তন মন্ত্রী করিম চৌধুরীর অনুগামীরা। তবে কলেজ নির্বাচনে অনেকটাই কোণঠাসা হতে হয় প্রাক্তন মন্ত্রীকে। কলেজে নির্বাচনে কলেজের কানাইয়ালাল অনুগামীদের মনোনয়ন তুলতে বাধা দিয়েছিলেন তাঁরা। পরে অবশ্য জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে সমস্যা মিটলেও কলেজের ছাত্র সংসদের বোর্ড গঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনকে ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ইসলামপুর কলেজ। কানাইয়ালাল অগ্রবাল ও চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের অনুগামীদের সঙ্গে গণ্ডগোল বাধে আবদুল করিম চৌধুরীর। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাসও ছুড়তে হয়। যদিও ঘটনার পরই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে ফেলা হয় প্রাক্তন মন্ত্রীকে। এমনকি কলেজের পরিচালন সমিতিও ভেঙে ফেলা হয়। শুধু তাই নয় সরিয়ে ফেলা হয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকেও। এর পরই অবশ্য দল বদলের সিদ্ধান্ত নেন মন্ত্রী।