পড়ুয়াদের স্কুলের পোশাক বিলিতে অনিয়ম রোধে এ বার কেন্দ্রীয় ভাবে প্রতি চক্রে (সার্কেলে) অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। জেলায় একমাত্র তপন পূর্বচক্রের অধীন ৫৬টি প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের স্কুল-ড্রেস দিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ওই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পড়ুয়া পিছু বরাদ্দ ৪০০ টাকায় প্রতি ছাত্রছাত্রীকে দু’সেট করে স্কুল ড্রেস দেওয়া হবে।
দক্ষিণ দিনাজপুরের ১৭টি চক্রের অধীন ১১৮৫টি প্রাথমিক স্কুলের মোট প্রায় ১ লক্ষ ৬৫ হাজার পড়ুয়াকে স্কুল-ড্রেস দিতে এ বার ওই নিয়ম চালু করেছে জেলা প্রশাসন। এত দিন প্রতিটি স্কুলের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে শিক্ষকদের মাধ্যমে পড়ুয়াদের পোশাক বিলি করা হতো। জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের চেয়ারম্যান তথা দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় ভাবে সংশ্লিষ্ট সার্কেলের এসআই (অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক) অফিসে টেন্ডার জমা দিতে হবে। সেখান থেকেই কাপড়ের মানের নমুনা যাচাই করে বরাত দেওয়া হবে।’’ এসআই বিজয়াশিস ঘটক জানান, তপন পূর্ব সার্কেলের স্কুলের পড়ুয়াদের পোশাক দিতে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি টেন্ডার বক্স খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশে ওই ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে শিক্ষক থেকে স্কুল এবং প্রশাসন কর্তৃপক্ষকে প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হয়েছে।’’
প্রতিটি স্কুলের পড়ুয়াদের পোশাক সরবরাহের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং সংস্থার কাছে টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্র চেয়ে ইতিমধ্যে স্কুলের তরফে পঞ্চায়েত, সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক স্কুল এবং এসআই অফিসে টেন্ডার ফর্ম ঝোলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসআই অফিসে টেন্ডার বাক্স খোলার দিন জেলা প্রশাসনের আধিকারিক এবং সংশ্লিষ্ট চক্রের প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের উপস্থিতিতে টেন্ডার ফর্ম খুলে বরাত দেওয়া হবে। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, বিগত বছরগুলিতে স্কুলে পোশাক বিলি নিয়ে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসে। নিম্নমানের অভিযোগ তো ছিলই। স্কুলের তরফে আবার অভিভাবকদের হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়ার নালিশও ওঠে। ফলে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় শিক্ষকদের রেখে সার্কেলের অধীন প্রতিটি স্কুলের জন্য বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার মাধ্যমে একই ধরনের স্কুল ড্রেস সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে বালুরঘাট, হিলি সহ বেশ কিছু সার্কেলে এসআই-রা বৈঠক করে জানালে অধিকাংশ শিক্ষক তীব্র আপত্তি তোলেন। শিক্ষকদের দাবি, এসআই অফিস থেকে কেন্দ্রীয় ভাবে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় শিক্ষকদের আদতে কোনও ভূমিকা থাকবে না। তাই শিক্ষকদের অনেকে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সামিল হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এত কিছু জটিলতা না করে সরাসরি জেলা স্কুল কর্তৃপক্ষকে পোশাক কিনে সরবরাহের দাবিও তুলেছেন তারা।