জখম: ছুরির আঘাতে জখম ছাত্রকে তখন নিয়ে আসা হয়েছে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার রাতে। ছবি: সন্দীপ পাল
কলেজের সোশ্যালে চাঁদা তোলা নিয়ে বির্তক তৈরি হয়েছিল। এ বার সেই সোশ্যালের রাতে এক ছাত্রকে ছুরি মারার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজে। বৃহস্পতিবার রাতে কলেজের সোশ্যাল শেষ হওয়ার পরে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সৌরভ মজুমদারকে ছুরি মারা হয় বলে অভিযোগ।
পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, কলেজ গেটেই লুটিয়ে পড়েন সৌরভ। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সৌরভকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, দুই বহিরাগত এসে সৌরভকে ছুরি মারে। এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ দিন সন্ধ্যেবেলায় সোশ্যাল চলাকালীনও মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ছাত্রীকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
যদিও কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রজ্জাক বলেন, “সোশ্যাল চলাকালীন কলেজে কোনও গোলমাল হয়নি।”
ছাত্রদের দাবি, সোশ্যালের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে স্কুটিতে চেপে সৌরভ বের হচ্ছিলেন। কলেজ গেটের সামনেই দু’জন তাঁর স্কুটি থামিয়ে সৌরভকে মারতে শুরু করে। তারপরেই ছুরি মেরে মোটরবাইকে চেপে দুই অভিযুক্ত পালায়। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক পরীক্ষার পরে জানানো হয়, সৌরভের ফুসফুসে ক্ষত হয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। রাত পর্যন্ত জানা গিয়েছে ছাত্ররা সৌরভকে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। খবর পেয়ে জলপাইগুড়ির অরবিন্দনগরের বাসিন্দা সৌরভের বাবা-মা হাসপাতালে এসে পৌঁছন। ততক্ষণে সৌরভকে শিলিগুড়িতে রওনা করানো হয়েছে। ছেলের ঘটনা শুনে বাবা-মা দু’জনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। দু’জনকেই হাসপাতালের পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
ছুরি মারার ঘটনায় টিএমসিপির দুই গোষ্ঠীর টানাপড়েনের ছায়া পড়েছে বলে দাবি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের একাংশের। সোশ্যালের চাঁদা তোলা নিয়ে এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগও জানায়। সে সব নিয়ে প্রথম থেকেই পরিবেশ তেতে ছিল বলে দাবি। টিএমসিপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ সিংহের সঙ্গে যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামীদের সোশ্যাল নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগও শোনা গিয়েছিল। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় রয়েছেন বলে জানিয়ে ফোনে বলেন, “এমন ঘটনা কখনওই বরদাস্ত করা যায় না। পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তদের ধরুক।”
অন্যদিকে টিএমসিপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ বলেন, “আমি নিজে পুলিশকে ফোন করে সোশ্যাল থামিয়ে দিতে বলি। কলেজে সিসিটিভি রয়েছে। সেগুলো পরীক্ষা করলেই দেখা যাবে কোন কোন বহিরাগত আজ দুপুর থেকে কলেজে ঢুকেছিল।”