নেতাজি-রবীন্দ্রনাথ কে, জানে না পড়ুয়ারা

নেতাজি কে? ক্লাস নিরুত্তর।রবীন্দ্রনাথ? ক্লাশের খুদে পড়ুয়ারা তখন এ ও-র মুখের দিকে চেয়ে।কিন্তু বিস্ময়ের আরও বাকি ছিল। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীর নাম?উত্তর এল, মালদহ।কলকাতা কোথায়? ক্লাশের জবাব, পতিরামের পাশে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৬ ০২:৫১
Share:

অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলছে পড়ুয়ারা। — নিজস্ব চিত্র

নেতাজি কে? ক্লাস নিরুত্তর।

Advertisement

রবীন্দ্রনাথ? ক্লাশের খুদে পড়ুয়ারা তখন এ ও-র মুখের দিকে চেয়ে।

কিন্তু বিস্ময়ের আরও বাকি ছিল। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীর নাম?

Advertisement

উত্তর এল, মালদহ।

কলকাতা কোথায়? ক্লাশের জবাব, পতিরামের পাশে।

দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের তিনটি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের কাছ থেকে এমন সব উত্তর পেয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য অবাক হয়ে শিক্ষকদের দিকে তাকান। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা বলেন, পড়ুয়া ১০৫ জন। শিক্ষক মাত্র তিন জন। এ দিন তার উপরে একজন শিক্ষক ছুটিতে। শিক্ষকদের দাবি, মিড ডে মিল পরিচালনা থেকে বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচি রূপায়ণে দায়িত্ব সেরে পঠনপাঠনে সমস্যা হয়। সে কথা শুনে অতিরিক্ত জেলাশাসক বলেন, সমস্যার কথা আগে না ভেবে সমাধানের কথা ভাবুন।

শুক্রবার মিড ডে মিলের মান পরিদর্শনের ফাঁকে কুমারগঞ্জ ব্লকে পর পর তিনটি প্রাথমিক স্কুলে গিয়েছিলেন সুদীপ্তবাবু।

কুমারগঞ্জের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রবীর মোহান্ত বলেন, ‘‘এমন হয়ে থাকলে শিক্ষকদের সচেতন করব।’’ পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি তথা প্রাক্তন সম্পাদক অজয় সাহা বলেন, ‘‘জেলার বেশির ভাগ স্কুলে পড়াশুনা হয়। কিছু ব্যতিক্রম আছে। তবে জেলার গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ প্রাথমিক স্কুলে এক বা দুই শিক্ষকের উপর নির্ভর করে চলছে। মিড ডে মিল পরিচালনা থেকে তার হিসাব এবং যাবতীয় নথিপত্র জমা-লেখার কাজেই শিক্ষকদের ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে কম শিক্ষক রয়েছেন এমন স্কুলগুলিতে সমস্যা রয়েছে।’’

এ দিন সকালে একটি দল নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের ৮টি ব্লকের একাধিক প্রাথমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে পরিদর্শনে বের হন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। দিনভর স্কুল স্কুলে গিয়ে মিড ডে মিলের সয়াবিনের তরকারি ও ডাল ভাত চেখে খুশি হন। পরে জেলাশাসক সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘হঠাৎ করেই সকালে সিদ্ধান্ত নিয়ে মিড ডের রান্নার মান, পরিমাণ এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় আছে কি না দেখতে সকলে বেরিয়ে পড়েছিলাম।’’ প্রত্যেক টিমের কাছ থেকে রিপোর্ট পেয়ে জেলাশাসক মিড ডে মিলের মান ও রান্না নিয়ে সন্তুষ্ট বলে জানান। তবে বেশ কিছু স্কুলে খুদে পড়ুয়াদের অক্ষর জ্ঞানের অভাব ও লেখাপড়ার মান নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে যান শিক্ষকেরা। বেশ কিছু প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়া নিজের নাম পর্যন্ত লিখতে পারেনি দেখে আধিকারিকেরা অবাক।

এ দিন তপন ব্লকের আউটিনা অঞ্চলের একটি স্কুলে অন্য চিত্র দেখা গিয়েছে। সেখানে শিক্ষাবন্ধু ভবেশ বর্মনকে নিয়ে হাজির হয়ে যান অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিজয়াশিস ঘটক। ভবেশবাবু বোর্ডে যোগ বিয়োগের অঙ্ক দিলে পড়ুয়ারা কষে দেখায়। স্কুলটিতে এ দিন মিড ডে মিলে পড়ুয়ারা খেয়েছে ডিমের ঝোল ভাত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন