সচেতনতা: হেলমেট পরলে দেওয়া হচ্ছে ফুল ও লাড্ডু। নিজস্ব চিত্র
শহরের রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ। ট্রাফিক পুলিশের চোখ এড়িয়ে বিনা হেলমেটে স্কুটি নিয়ে রাজমহল রোডের দিকে ছুটছিলেন শহরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী রোহিত আগরওয়াল। পুলিশের নজর এড়িয়েও গিয়েছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে গেলেন মালদহ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে। কলেজের পড়ুয়ারা রোহিতের মাথায় পরিয়ে দিলেন নতুন হেলমেট। শুধু তাই নয়, তাঁকে মিষ্টিমুখও করানো হয়। তার পরেই প্রশ্ন—‘‘কেন পরেননি হেলমেট?’’ তিনি বলেন, “হেলমেট চুরি হয়ে গিয়েছে। নতুন কেনা হচ্ছিল না। এমন আর হবে না।”
পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ চলছে মালদহে। পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে পথ নাটিকা থেকে শুরু করে চলছে সচেতনতা প্রচার। তার পরেও হেলমেটহীন মোটরবাইক চালানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে ইংরেজবাজার শহরে। বুধবার দুপুরে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আসরে নামে মালদহ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্টুডেন্ট কাউন্সিলের টাকায় কেনা হয়েছে হেলমেট। হেলমেটহীন মোটরবাইক চালকদের দেওয়া হচ্ছে সেই হেলমেট। এ ছাড়া হেলমেট পরে যাঁরা মোটরবাইক চালাচ্ছেন তাঁদেরও শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। প্রত্যেককে গোলাপ ফুল এবং লাড্ডু খাওয়ানো হচ্ছে। সস্ত্রীক হেলমেট পরে মোটর বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন রঞ্জিত মণ্ডল নামে এক যুবক। তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকে ফুল এবং লাড্ডু খাওয়ানো হয়। রঞ্জিত বাবু বলেন, “পুলিশের ভয়ের বদলে নিজের জন্যই হেলমেট পরা প্রয়োজন।” পড়ুয়াদের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে পুলিশ কর্তারাও।
এ দিন রবীন্দ্র অ্যাভিনিউ চত্বরের কলেজের অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছিলেন পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ, উপ পুরপ্রধান দুলাল সরকার, কাউন্সিলর শুভময় বসু, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রভাস চৌধুরী সহ প্রমুখ। নীহাররঞ্জন বলেন, “প্রশাসনের তরফে প্রচার চলছে। আমাদের তরফেও সচেতনতামূলক প্রচার হবে।” পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলরদের হেলমেট পরে বাইক চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রভাস চৌধুরী বলেন, “ছাত্রদেরও আমরা হেলমেট পরা নিয়ে সচেতন করি। সকলে নিজের ভাল বুঝতে পারলে দুর্ঘটনা রোখা অনেকটাই সম্ভব হবে।”