বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন মহকুমা পরিষদে

এই ঘটনাকে অনিয়ম বলে দাবি করছেন কর্তৃপক্ষ। উপ সমিতির খাতে যে টাকা বরাদ্দ হওয়ার কথা ছিল তা কে বা কারা খরচ করল, কোথায় খরচ হল তা জানতে রিপোর্ট চাওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২৯
Share:

ফাইল চিত্র।

দু’বছর আগে সকলে গ্রাম পঞ্চায়েত সঞ্চালক নির্বাচিত হয়েছেন। দু’বছর তারা জানতে পারলেন তাদের কাজ ঠিক কী, এবং কি ভাবে করতে হয়। জানতে পারলেন গত দু’বছরে তাঁদের উপসমিতিতে বাজেট বরাদ্দ হওয়ার কথা ছিল। এমনই অবস্থা শিলিগুড়ি মহকুমায়।

Advertisement

গত দু’বছরে মহকুমার কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ সমিতির বৈঠক হয়নি বলে অভিযোগ। আইন অনুযায়ী প্রতিটি উপসমিতি বাজেট বরাদ্দ পাওয়ার কথা। শিলিগুড়ি মহকুমায় তা হয়নি বলে খোঁজখবর করে জানতে পেরেছে মহকুমা পরিষদ কর্তৃপক্ষের।

এই ঘটনাকে অনিয়ম বলে দাবি করছেন কর্তৃপক্ষ। উপ সমিতির খাতে যে টাকা বরাদ্দ হওয়ার কথা ছিল তা কে বা কারা খরচ করল, কোথায় খরচ হল তা জানতে রিপোর্ট চাওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। গত দু’বছরে শিলিগুড়ি মহকুমার ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১০টি উপসমিতি মিলিয়ে অন্তত ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ার কথা ছিল। এখন সেই অর্থের খোঁজ করতে নেমেছে পরিষদ।

Advertisement

সোমবার ও এ দিন মঙ্গলবার দু’দিন ধরে মহকুমা পরিষদের সভা ঘরে সঞ্চালকদের ডেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হল। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই পাঁচটি করে উপ-সমিতি থাকে। এই সমিতিগুলি বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের পরিকল্পনা ও রূপায়ণের খসড়া তৈরি, বরাদ্দ বিলি বন্টন করে। একজন পঞ্চায়েত সদস্যকে সঞ্চালক নির্বাচিত করা হয়, তিনিই সমিতির বৈঠক ডাকেন এবং পরিচালনা করেন।

সূত্রের খবর, গত দু’বছরে ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের কোনও উপসমিতির যথাযথ বৈঠক হয়নি। এ দিন প্রশিক্ষণ নিতে আসা মাটিগাড়ার একটি উপসমিতির সঞ্চালক বলেন, ‘‘আমি যে বৈঠক ডাকব সেটাই তো জানতাম না। এ বার থেকে তাই করব। উপ সমিতি যে খরচের জন্য টাকা পায় তাও জানা ছিল না।’’

শিলিগুড়ির ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে ১১০টি উপসমিতি রয়েছে। অর্থ ও পরিকল্পনা, শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্য। নারী, শিশু উন্নয়ন, কৃষি এবং শিল্প বিষয়ক উপসমিতি রয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই ক্ষেত্রগুলিতে দু’ভাবে টাকা বরাদ্দ হয়। এক সরাসরি জেলা থেকে টাকা দেওয়া হয়, দুই গ্রাম পঞ্চায়েতে বাজেটের বরাদ্দ থেকে উপসমিতিতে অর্থ দেওয়া হয়। গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকেই সেই টাকা বরাদ্দ করতে হয়। অর্থ খরচের পরিকল্পনা একেবারে স্থানীয় স্তরে করতেই এই পরিকল্পনা।

প্রশ্ন উঠেছে, যদি এই উপসমিতিগুলিতে অর্থ বরাদ্দ না হয় তবে সেই টাকা গেল কোথায়? কী ভাবেই বা সেই টাকা খরচ হল? সে সবও তদন্ত করে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপসকুমার সরকার। তাপসবাবু বলেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ঠিকঠাক কাজ যাতে হয় তা সুনিশ্চিত করতে রুটিন প্রক্রিয়া চলে। এ দিনের প্রশিক্ষণ সেই প্রক্রিয়ারই অঙ্গ। সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর থেকে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’’

হঠাৎ এতদিন পরে কেন প্রশিক্ষণের কথা মনে হল? মহকুমা পরিষদ কর্তৃপক্ষের দাবি, যে কোনও কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যের প্রকল্পে আসা টাকার বিলি-বরাদ্দ কীভাবে হয় তা নিয়ে কয়েক বছর পরপর অডিট হয়। তেমনিই একটি প্রকল্পের অডিটে বিষয়টি জানতে পেরেই তড়িঘড়ি প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন