Child Adoption

Child adoption: কাছে, তবু ছেলেকে দেখতে পেলেন না মা

হোম থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে মাকে। বলা হয়েছে, শিশুকল্যাণ সমিতির নির্দেশ নেই।

Advertisement

 অনির্বাণ রায় 

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২১ ০৫:১৪
Share:

ফাইল চিত্র।

পনেরো ফুটের একটা পাঁচিল। এক দিকে ছেলে, আর একদিকে মা। দু’জনের দেখা হয়নি পাঁচ বছর। যে ছেলেকে খুঁজতে মাইলের পর মাইল হেঁটেছেন মা, সেই ছেলে যে পাঁচিলের ও-পারে তাও জানতেন না তিনি। গত শুক্রবার জলপাইগুড়ির শিশুকল্যাণ সমিতির তরফে সুকরি দাসকে জানানো হয়েছে, তাঁর ছেলে জলপাইগুড়ির কোরক হোমে রয়েছে। টিকিয়াপাড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকেন সুকরি। যেখান থেকে ওই হোমের দূরত্ব কয়েক হাত। কয়েকমাস ধরে এত কাছে থেকেও ছেলের হদিশ জানতে পারেননি তিনি। শুক্রবার জানার পরে কাগজ হাতে এ দিন শনিবার হোমে গিয়েছিলেন ছেলেকে একবারটি দেখতে। হোম থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে মাকে। বলা হয়েছে, শিশুকল্যাণ সমিতির নির্দেশ নেই। হোমের উঠোনে বসে বেশ কিছুক্ষণ কেঁদেছেন তিনি। বলেছেন, “কী একটা কাগজের জন্য ছেলেটাকে দেখতে দিল না। এরা এত নিষ্ঠুর হয় কী করে! একজন মাকে ছেলের মুখ দেখতে দেয় না। পাঁচ বছর হয়ে গেল দেখিনি। এতদিনে মনে হয় লম্বা হয়েছে অনেকটা। আগে তো রোগা ছিল, আরও রোগা হল কিনা কে জানে!”

Advertisement

সুকরির মেয়েকে যে দক্ষিণ দিনাজপুরের হোম থেকে দত্তক দেওয়া হয়েছে, সে নথিও এসেছে সমিতির কাছে। মেয়েকে ফেরত পেতে সুকরিকে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হবে। সুকরির কথায়, “অত টাকা আমার নেই। কিন্তু আমাকে না জানিয়ে মেয়েকে দত্তক দিল কী করে?” এই প্রশ্ন শিশুকল্যাণ সমিতির সদস্যদের একাংশেরও।

২০১৬ সালে জলপাইগুজ়ির পিলখানার করলার চরের বাসিন্দা সুকরি দাসের বাড়ি পুড়ে যায়। এক বছরের মেয়ে এবং ছয় বছরের ছেলেকে নিয়ে সুকরি থাকতেন। আগুনে সুকরিও দগ্ধ হয়েছিলেন অনেকটাই। সেই সময় সুকরির ছেলেমেয়েকে হোমে পাঠিয়ে তাঁর চিকিৎসা করাতে কলকাতায় পাঠান হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তী। বছরখানেক পরে শিশু পাচারের অভিযোগে চন্দনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর হোম বন্ধ করে দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের কাছে জমা পড়া নথি অনুযায়ী সিআইডি অভিযানের পরে হোম থেকে সুকরির ছেলেমেয়েকে দক্ষিণ দিনাজপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে সুকরির মেয়েকে দত্তক দেওয়া হয় এবং ছেলের বয়স বেশি থাকায় জলপাইগুড়ির কোরক হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাঁচ বছর ধরে চিকিৎসার পরে সুকরি ফিরে এসে এখন ছেলেমেয়েকে ফিরে পেতে আবেদন করেছেন। তার পর থেকেই একাধিক প্রশ্ন এবং দত্তক দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কিন্তু এ দিন কেন সুকরির সঙ্গে কোরক হোমে থাকা ছেলের দেখা করতে দেওয়া হল না?

Advertisement

শিশুকল্যাণ সমিতির সদস্য সুবোধ ভট্টাচার্য বলেন, “সমিতির তরফ থেকে সুকরি দাস এবং তাঁর ছেলেটির সম্পর্কে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন