দাড়িভিট হাইস্কুল।— ফাইল চিত্র।
দাড়িভিট স্কুলের যাবতীয় হিসেব ১৯ নভেম্বর পেশ করার কথা ছিল সাসপেন্ডে থাকা প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডুর। সাতদিনের মধ্যে হিসেব না পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল। তবে মহকুমাশাসকের কাছে হিসেব জমা না দিলেও স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককেই হিসেবের একাংশ পেশ করা হয়েছে বলেই জানতে পেরেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। কিন্তু পুরো হিসেব মিলল কি না, তা নিয়ে এখনই স্কুল কর্তৃপক্ষ মুখ খুলতে চাননি।
মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র বলেন, ‘‘হিসাব পেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আমার কাছে এখনও কোন হিসেব তিনি পেশ করেননি। শুনেছি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে হিসেব দিয়েছেন। সেটা আমার কাছে এলে খতিয়ে দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’ যদিও এই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমি কিছু বলব না। যা বলার মহকুমাশাসকই বলবেন।’’
গত ২০ সেপ্টেম্বর স্কুলের শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে দাড়িভিট হাইস্কুল। গুলিতে তাপস বর্মণ ও রাজেশ সরকার নামে দু’জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র বিপ্লব সরকার। দাড়িভিট-কাণ্ডের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল স্কুল। ঘটনায় পরই সাসপেন্ড করা হয় জেলার স্কুল পরির্দশক রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। স্কুল খোলার আগেই সাসপেন্ড হন প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পান স্কুলের সহকারি শিক্ষক অনিল মণ্ডল। প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ইসলামপুরের মহকুমাশাসককে। এর পরেই সাসপেন্ড থাকা প্রধান শিক্ষককে স্কুলের হিসেব পেশ করতে বলেন মহকুমাশাসক।
সোমবার থেকে পঞ্চম হতে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকেরা গেলেও থানায় অভিযোগে রয়েছে দুই শিক্ষক সুদীপ্ত সিংহ, আসারুল হক ও করণিক আসিফ ইকবালকে এখনও দেখা যায়নি স্কুলে। প্রশাসনের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা শিক্ষা দফতরের অফিসে রেজিস্ট্রেশনের কাজ করছেন। ঘটনার পর থেকেই বন্ধ ছিল স্কুল। গত ১০ নভেম্বর স্কুলের চাবি প্রশাসনের হাতে তুলে দেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। যদিও স্কুলের সামনে ধর্না মঞ্চে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন নিহত দুই পরিবারের সদস্যরা। এলাকাবাসীও রয়েছেন। ধর্না ১৮ দিনে পড়ল। এ দিন তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন জেলার বিজেপির নেতৃত্বও। নিহত তাপসের মা মঞ্জুদেবী বলেন, ‘‘ধর্না চলবে। বিজেপি নেতৃত্ব রথযাত্রা নিয়ে কথা বলতে এসেছিলেন।’’ ধর্নার জায়গায় রথ রাখার কথা তুলেছেন বিজেপি নেতারা। মঞ্জুদেবীরা তাতে রাজি বলে জানিয়েছেন।