পাশাপাশি: ইসলামপুরে তৃণমূলের সভায় পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
মালদহ জেলায় তৃণমূল নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত দলের এই জেলার পর্যবেক্ষক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার রাতে নারায়ণপুরের একটি হোটেলে তিনি জেলা নেতৃত্বকে তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েও দিয়েছেন।
বিধানসভা ভোটের আগে সাবিত্রী-কৃষ্ণেন্দু দ্বন্দ্বে জেরবার হয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই নিয়ে কড়া ধমক দিলেও কাজ হয়নি। বিধানসভা ভোটে এই জেলায় একটাও আসন পায়নি তৃণমূল। তার পরও দলীয় কোন্দলের জন্য জেলা পরিষদের বাজেট পাশ হতে এত দিন লেগে গেল।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারের বৈঠকে শুভেন্দুবাবু জানান, বারবার বলা সত্ত্বেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব না মেটায় তিনি বিস্মিত এবং লজ্জিত। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বহু কষ্টে জেলা পরিষদ এনে দিয়েছি। পুরসভার ঝামেলা মিটিয়েছি। তবু দ্বন্দ্ব কিছুতেই যাচ্ছে না।’’ সূত্রের খবর, ওই সভায় তিনি মালদহের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চাইছেন বলেও জানিয়েছেন। তবে ‘শেষ চেষ্টা’ হিসেবে জেলার কোর কমিটির সব সদস্যকে আগামী ২১ এপ্রিল কলকাতায় তলব করেছেন শুভেন্দু। জানান, সেখানে সুব্রত বক্সীর সামনে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
দলের অন্দরের খবর, ওই সভায় তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের দল পরিচালনা নিয়ে অভিযোগ ওঠে। বিধানসভা ভোটের এক দলীয় প্রার্থী অভিযোগ করেন, জেলায় দলের ৩২ জনের একটি কোর কমিটি থাকলেও বৈঠক হয় না। কখনও যদি সভা হয়, তার বিষয়বস্তু থাকে না। হরিশ্চন্দ্রপুরের এক বর্ষীয়ান নেতা সভায় বলেছেন, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। অথচ ব্লকগুলোয় কোনও দলীয় কমিটিই নেই। এ ভাবে কি দল চলে?
এই সব বক্তব্যকে ‘অর্ধসত্য’ আখ্যা দিয়ে মোয়াজ্জেম ঘনিষ্ঠ এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘কোর কমিটির দু’টি সভা হয়েছে। তবে আলোচনার পরে আর কাজ এগোয়নি।’’ মোয়াজ্জেম ঘনিষ্ঠ আর এক নেতার অভিযোগ, জেলা নেতারা বেশির ভাগই জেলা পার্টি অফিসে আসেন না। এক নেতা আবার শ্রমিক সংগঠনে দলের কিছু সদস্য বিনা কারণে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেন বলেও তোপ দাগেন। মোয়াজ্জেম অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি।
সব শুনে বিরক্ত শুভেন্দু ২১ তারিখে কোর কমিটির সব সদস্যকে কলকাতায় ডাকেন।