সভা সত্ত্বেও রইল চিন্তা

দাড়িভিট-কাণ্ডের পরে দলের রাজ্য পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দুর অধিকারীর সভায় ভিড় হলেও, তৃণমূলের অন্দরের খবর, যত লোকসমাগম হবে বলে দলের মধ্যে কানাঘুষো ছিল, তার অর্ধেকও হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৪২
Share:

বক্তা: সভায় শুভেন্দু অধিকারী। ইসলামপুরে। নিজস্ব চিত্র।

দাড়িভিট-কাণ্ডের পরে দলের রাজ্য পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সভায় ভিড় হলেও, তৃণমূলের অন্দরের খবর, যত লোকসমাগম হবে বলে দলের মধ্যে কানাঘুষো ছিল, তার অর্ধেকও হয়নি। তাই হয়তো মঞ্চ থেকে জেলা সভাপতি অমল আচার্যকে বলতে শোনা গেল, ‘‘প্রচুর লোক আসার কথা ছিল। কিন্ত এত জায়গায় কোথা থেকে দেব! অনেকে গাড়ির ভাড়া চাইছে। কোথা থেকে টাকা পাব? এ দিনের সভায় যারা এসেছেন নিজেরাই খরচ করে এসেছেন। তাই যারা আসতে পারেননি তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ফের সভা হবে। এই সভা শেষ নয়।’’

Advertisement

তবে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক সুরজিৎ সেনের অভিযোগ, টাকা দিয়েও ঘোষণা মতো ভিড় করতে না পারায় তৃণমূলের নেতারা মঞ্চ থেকে ওই ধরনের কথা বলতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, টাকা নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে তৃণমূলের বেশ কয়েক জনের মধ্যে গণ্ডগোল দেখেছেন অনেকেই।

যদিও ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দাবি, ‘‘স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ৩০ হাজারের বেশি লোক এসেছিলেন।’’ ডালখোলা পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান সুভাষ গোস্বামীর দাবি, ‘‘আমাদের শহর থেকে ছোট এবং বড় গাড়ি মিলে প্রায় ১০০ গাড়ি এসেছিল।’’

Advertisement

ইসলামপুরে বেসরকারি সবকটি বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র ইসলামপুরের ছোট বড় মিলিয়ে ৩৫০টি গাড়ি নেওয়া হয়েছিল। এ দিনের সভাকে ঘিরে ইসলামপুর ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক বা ইসলামপুর বাস টার্মিনাস যানজট হয়। গাড়িগুলোকে শহরের ট্র্যাক স্ট্যান্ডের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন সড়কের উপর দাঁড় করানোর ফলে পথ চলতি মানুষের ব্যাপক ভোগান্তি হয়।

তবে সভায় অব্যবস্থা নিয়ে দলীয় কর্মীরা অনেকে সরব হয়েছেন। দুপুর ১২ টা থেকে লোকজন জমায়েত হলে সভার মুল সময়ে অনেকে বিরক্ত হয়ে সভাস্থল ছেড়ে যান। দলের নেতারা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। করণদিঘি থেকে আসা সভায় আলি রেজা সুনীল সিংহরা বলেন, ‘‘সেই দুপুর থেকে বসে থেকে এক গ্লাস জল পাইনি।’’

অব্যবস্থা নিয়ে ফেসবুকে অনেক দলীয় কর্মী ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তৃণমূলের এক কর্মী মজিবুর রহমান তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘নেতা মন্ত্রীদের ক্যাটাগরি হিসেবে চেয়ার। আর সাধারণ মানুষের জন্য বসার জন্য সুস্থ বসার ব্যবস্থা নেই। আগামীতে যেন এই ধরনের সভার ক্ষেত্রে প্যান্ডেল করে বসার ব্যবস্থা করা হয়।’

উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানান, সভাকে ঘিরে যানজট মোকাবিলায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন ছিল। তবে অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটেনি।

শুভেন্দুর এই সভা থেকে তৃণমূল কতটা রাজনৈতিক সুবিধা পাবে, তা নিয়েও তর্ক শুরু হয়েছে। দাড়িভিটে এখন কিছু লোক চাইছেন স্কুল খুলতে। পুজোর ছুটির পরে স্কুল খুলতে গেলে সিবিআই তদন্তের দাবি মেনেই তা করতে হবে বলে জানিয়েছেন নিহত দুই ছাত্রের পরিবার। সেই দুই পরিবারকে বুঝিয়ে স্কুল খোলার ব্যাপারে প্রশাসন কতটা তৎপর তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

তবে তৃণমূলের দাবি, শুভেন্দুবাবু পরিবহণমন্ত্রী ও দলের পর্যবেক্ষক, তাই তিনি স্কুল খোলার বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন