অনুষ্ঠানে: হোমের আবাসিকদের আদিবাসী নৃত্য। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের সময়টুকু বাদে চার দেওয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তাদের জীবন। মালদহের সঞ্জয় মুর্মু, গোপাল মার্ডি, জলপাইগুড়ির কাজল বাসফোর বা উত্তর দিনাজপুরের পরিমল হেমব্রম থেকে শুরু করে মুর্শিদাবাদের সিদ্ধার্থ সাহারা। সকলেই রাজ্য সরকারের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার পরিষেবা দফতরের নিয়ন্ত্রণে থাকা সরকার পোষিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত হোমের আবাসিক।
কিন্তু সেই আবাসিকদের মধ্যেও সাংস্কৃতিক যে প্রতিভা রয়েছে, তা বিকাশের কোনও সুযোগ ছিল না বলেই অভিযোগ।
অবশেষে, দফতরই এই প্রথম সেই আবাসিকদের সাংস্কৃতিক প্রতিভা বিকাশের লক্ষে চালু করল প্রতিভা অন্বেষণ উত্সব। শুক্রবার মালদহ টাউন হলে অনুষ্ঠিত হল উত্তরবঙ্গ জোনের সেই প্রতিভা অন্বেষণ উত্সব। সেখানে অংশ নিয়ে উত্তরবঙ্গের আটটি হোমের আবাসিকরা কেউ নাচল, কেউবা ছবি আঁকল আবার কেউ মঞ্চস্থ করল নাটকও। এ দিন টাউন হলে দিনভর কার্যত হুল্লোড়েই মাতলেন উত্তরের আটটি হোমের অন্তত দুশো আবাসিক।
এমন একটি সাংস্কৃতিক আবহে যারপরনাই খুশি সেই শিশু-কিশোর আবাসিকরা।
এদিন এই উত্সবে নাচ পরিবেশন করে মালদহের সাহাপুর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার হোমের সঞ্জয় মুর্মু, গোপাল মার্ডি, বাপুজি মুর্মুরা। তাঁরা জানান, খুব ভাল লেগেছে। বসে আঁকো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল জলপাইগুড়ি রায়কতপাড়া চাইল্ড ওয়েলফেয়ার হোমের (বালিকা) আবাসিক কাজল বাসফোর। সে বলে, ‘‘এ বারই প্রথম আমি এমন প্রতিযোগিতায় যোগ দিলাম। হোমে আমাদের আঁকা শেখানো হয়, কিন্তু বাইরে কোথাও কোনও প্রতিযোগিতায় যোগ দিইনি আগে।’’
এ দিকে এদিন প্রতিযোগিতার আগে নীল-সাদা বেলুন নিয়ে ইংরেজবাজার শহরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। পরে টাউন হলে প্রদীপ জ্বালিয়ে এই উত্সবের উদ্বোধন করেন মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল। দিনভর সেই উত্সব চলে।
রাজ্য স্তরের উত্সব হবে ১৫ ও ১৬ জানুয়ারি, কলকাতায়।