টানা বন্ধে কাজ হয়নি। তবু বেতন পাবেন সরকারি ও জিটিএ কর্মীরা। শিক্ষকরাও বাদ যাবেন না। কিন্তু চা বাগানে সওয়া তিন মাসের মজুরি ও অন্য সুবিধাগুলি দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় কাটছে না। তাই এই সব দাবিতে মালিকপক্ষ, রাজ্য এবং জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ডের উপরে চাপ বাড়াতে চাইছেন মোর্চা-বিরোধী চা শ্রমিকরা। বিনয় তামাঙ্গের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা। প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবেন বলেও জানিয়েছেন।
চাপের মুখে বিনয় নিজের দলের চা শ্রমিক সংগঠনকেও আসরে নামিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপও চেয়েছেন। চা শ্রমিকরা কেন বনধের তিন মাসের সুযোগ সুবিধে পাবে না— ২১ নভেম্বর পিনটেল ভিলেজে সর্বদল বৈঠকে সেই প্রশ্ন তোলেন কয়েক জন প্রতিনিধি। বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি চা শ্রমিকদের সমস্যা ও আর্জি খতিয়ে দেখার জন্য বাগান মালিক সংগঠনকে অনুরোধ করবেন। এই আন্দোলনের সম্ভাবনায় উদ্বিগ্ন দার্জিলিঙের ৭৬টি চা বাগানের মালিকদের সংগঠন। ১০৪ দিন বন্ধে যে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, শীতের শুরুতে ‘অটাম ফ্লাশ’-এ সেই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে কয়েকটি বাগান। কিন্তু, ৩০টির বেশি বাগানে সেই ‘অটাম ফ্লাশের’ পরিস্থিতি ভাল নয় বলে দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশন (ডিটিএ) সূত্রের দাবি। সংগঠনের চেয়ারম্যান বিনোদ মোহন একই সঙ্গে বলেন, ‘‘চা বাগান প্ল্যান্টেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী, কাজ না হলে মজুরি মেলে না। তাই বন্ধের সময়ের মজুরি দেওয়া সম্ভব নয়।’’ তবে রাজ্য বা মুখ্যমন্ত্রী সরকারি ভাবে অনুরোধ করলে তা নিয়ে আলোচনায় বসবেন বলেও জানান তিনি। সংগঠনের কয়েক জন কর্তা জানান, বন্ধের সময়ে শ্রমিকরা কিন্তু জ্বালানি, রেশন, এমনকী আংশিক বোনাসও পেয়েছে। বিনয় প্রভাবিত দার্জিলিং-ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন লেবার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক পি টি শেরপা এই দাবি নস্যাৎ করে বলেন, ‘‘চা শ্রমিকদের বোনাস ৫০ শতাংশ বকেয়া রয়েছে।’’