হঠাৎ করে বন্ধ করা যাবে না বাগান

মতভেদ হতেই পারে, তাই বলে হঠাৎ করে বন্ধ করা যাবে না বাগানে। শ্রমিকরা যেমন হঠাৎ কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নামতে পারবেন না, তেমনই মালিকপক্ষও পারবেন না বাগান বন্ধ করে দিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

সুকনা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৯ ০৪:২১
Share:

চা-বাগানের ইউরোপীয় মালিকরা নজর দিয়েছিলেন চিকিৎসা পরিষেবার দিকে।

মতভেদ হতেই পারে, তাই বলে হঠাৎ করে বন্ধ করা যাবে না বাগানে। শ্রমিকরা যেমন হঠাৎ কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নামতে পারবেন না, তেমনই মালিকপক্ষও পারবেন না বাগান বন্ধ করে দিতে। বন্ধ হয়ে থাকা তরাইয়ের শিমুলবাড়ি চা বাগান খুলতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে এমনই লিখিত চুক্তি করল শ্রমদফতর। শনিবার যুগ্ম শ্রম কমিশনারের (উত্তরবঙ্গ) দফতরে স্বাক্ষরিত হয়েছে ওই ত্রিপাক্ষিক চুক্তি।

Advertisement

এ দিনই শিমুলবাড়ি বাগান কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, আজ, রবিবার থেকে খোলা হবে বাগান। এই খবরে খুশি সাধারণ শ্রমিকরাও। শ্রম দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে কোনও সমস্যা হলে দুই পক্ষকেই আগে শ্রমদফতরে জানাতে হবে। সেই সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে। তাতে সমাধান সূত্র না বেরলে তবেই মালিক বা শ্রমিকপক্ষ নিজেদের মর্জিমতো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। বাগান সমস্যা মেটাতে এমন চুক্তিকে ‘অভিনব’ বলেই মনে করছেন শ্রমদফতরের আধিকারিকদের একাংশ।

মালিকপক্ষের অভিযোগ, শ্রমিকদের একটা অংশ দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ না করায় উৎপাদন ব্যাপক হারে কমে গিয়েছে। এই অভিযোগেই ২৫ ফেব্রুয়ারি কাজ বন্ধের নোটিস দিয়ে বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছিল শিমুলবাড়ি কর্তৃপক্ষ। ১৩ দিন পরে খুলছে বাগান। এ দিন যুগ্ম শ্রম কমিশনার চন্দন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘মালিক ও শ্রমিকপক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ছিল। উভয়পক্ষেরই কিছু দাবি আছে। সেই সমস্যা সমাধানে ১০ দিনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবে মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। তেরাই ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টিপা) দফতরে বৈঠক হবে। সেখানে সমস্যা না মিটলে এক মাসের মধ্যে আমাদের উদ্যোগে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করা হবে।’’ টিপার সচিব মলয়কুমার মৈত্র বলেন, ‘‘শ্রম দফতরের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। দ্রুত বৈঠকের ব্যবস্থা করা হবে।’’ বাগান মালিক মহেন্দ্র বনশাল বলেন, ‘‘নিজেদের ক্ষতি করে আমরাও বাগান বন্ধ রাখতে চাই না। কিন্তু বাধ্য হয়ে ওই রাস্তায় হাঁটতে হয়েছে। আমরা চাই শ্রমিকরা নিয়ম মেনে কাজ করুক এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক।’’

Advertisement

শিমুলবাড়ি বাগানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, জিএনএলএফ ও তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আছে। এ দিন বৈঠকে তিন সংগঠনের প্রতিনিধিই ছিলেন। তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা বাদল দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘শ্রম দফতরের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।’’ আলোচনায় বসার জন্য তাঁরা রাজি বলে জানিয়ে মোর্চার চা শ্রমিক নেত্রী করুণা গুরুং বলেন, ‘‘আমরা বাগান বন্ধের বিরোধী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন