ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ জাঁকিয়ে ঠান্ডা না পড়ায় কোচবিহারে শীতের পোশাকের বাজার জমেনি। ফলে পোশাক ব্যবসায়ীদের চিন্তা বেড়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাপমাত্রার পারদ না নামলে লোকসানের আশঙ্কাও করছেন তাদের অনেকে। অথচ দোকান থেকে শপিং মলে সাজানো রয়েছে মেয়েদের উলের কুর্তি, টপ, হাফ জ্যাকেট, সোয়েটার, শাল, চাদর, স্টোলের রকমারি পসরা। ছেলেদের জ্যাকেট, জাম্পার, সোয়েটার, কোট-প্যান্টেরও প্রচুর সম্ভার। ব্যবসায়ীরা জানান, বিক্রিই নেই। কোচবিহার জেলা বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম কুণ্ডু বলেন, “বিয়ের মরসুমের সঙ্গে কনকনে ঠান্ডার মেলবন্ধনে শীতের পোশাক বিক্রি জমে। এ বার বিয়ের মরসুম চললেও সে ভাবে শীত পড়েইনি। শীতের পোশাক বিক্রির হাল খুব খারাপ।” তুফানগঞ্জের এক ব্যবসায়ী মলয় সাহা বলেন, “ হাতমোজা, ভেল, মাঙ্কি টুপির মত ছোট সামগ্রীর চাহিদাও নেই। ঠান্ডাই যে সেভাবে পড়েনি। গতবারও এমন ছিল না।”
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ কৃষি মৌসম সেবাকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরেও কোচবিহারের তাপমাত্রার সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশিরভাগ দিনই গড়ে ২৮-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোচবিহারে সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮-২৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকবে বলে পূর্বাভাস মিলেছে। ওই সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩-১৪ ডিগ্রির মধ্যে থাকবে। ওই গ্রামীণ সেবা কেন্দ্রের নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দোপাধ্যায় বলেন, “নিম্নচাপজনিত কারণে বাতাসে জলীয় বাস্প বেড়ে গিয়েছে বলেই এ বার শীত এখনও জাঁকিয়ে পড়েনি। তবে ডিসেম্বরের আর কিছুদিন পেরোলে ঠান্ডা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
বাসিন্দারা জানান, সব মিলিয়ে দিন-রাতে তাপমাত্রার ফারাক বাড়লেও শীতের আমেজ নেই একেবারেই। তাছাড়া দিনের বেলায় অনেক সময় সোয়েটার পড়ে হেঁটে কাজকর্ম করলেও ঘামতে হচ্ছে। দিনের বেলা স্রেফ জামা চাপিয়েও অনেকে ঘোরাঘুরি করছেন। কেউ ফুল সোয়েটার এখন আলমারি থেকেই নামাননি। তুফানগঞ্জের বাসিন্দা চিকিৎসক নীলরতন সরকার বলেন, “এখনও হাফ সোয়েটারে কাজ চলে যায়। অনেক সময় সেটাও লাগছে না। শীতের আমেজ নেই।” কয়েক জনের আক্ষেপ, ‘‘কনকনে শীত নেই। জমছে না কমলালেবু থেকে খেজুরগুড়ের পায়েসে রসনাতৃপ্তি।’’