নিদর্শন: জল্পেশের সেই গোল গম্বুজ ও কারুকাজ। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
কথিত আছে, এই মন্দির তৈরিতে হাত লাগিয়েছিলেন মুসলিম কারিগরেরা। এখন মন্দির কর্তৃপক্ষ চাইছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্দিরে এসে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিন। সে জন্য তাঁরা কলকাতা গিয়েছেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি থেকে ফিরলে বুধবারই তাঁরা দেখা করতে চান।
এ মাসের শেষে কোচবিহারে যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। জল্পেশ কর্তৃপক্ষ চাইছেন, তখন, নয়তো শ্রাবণী মেলার সময়ে মন্দিরে আসুন মমতা। মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরীন্দ্রনাথ দেব বলেন, ‘‘জল্পেশ মন্দির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত৷ মুখ্যমন্ত্রী এখান থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিন।’’
কেন এমন বলছেন গিরীন্দ্রনাথ? এর পিছনে রয়েছে মন্দির নিয়ে মুখে মুখে ফেরা সব কাহিনি। তারই একটি শোনালেন মন্দির কর্তৃপক্ষ— ১৬৩২ সালে কোচবিহারের মহারাজা প্রাণনারায়ণ মন্দির তৈরিতে হাত দেন। শেষ করেন তাঁর ছেলে মোদনারায়ণ। মন্দিরটি তৈরির কাজে হিন্দুদের সঙ্গে হাত লাগিয়েছিলেন মুসলিম স্থপতিরাও। মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, মন্দিরের মাথায় যে গোল গম্বুজ আর চুড়ো, তা ওই স্থপতিদের হাতের কাজ। ওই গম্বুজে যে কারুকাজ রয়েছে, তা-ও মুসলিম কারিগরদের কাজ বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। মন্দির কমিটি বলছে, এই দু’টিই ওই কাহিনিকে স্বীকৃতি দেয়।
শিব চতুর্দশী ও শ্রাবণী মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয় মন্দিরে। তা ছাড়াও বছরভর ভিড় লেগে থাকে এখানে৷ মূলত পুত্রের মঙ্গল কামনায় আসেন মানুষ। গিরিনবাবু বলেন, ‘‘পুত্রের মঙ্গল তো কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের লোকজন চাইবেন, এমন নয়। তাই সকলের জন্যই আমাদের দরজা খোলা।’’ তিনি জানান, জলপাইগুড়ির নবাব পরিবারের সদস্য ফিরদৌসিও এসে প্রার্থনা করে গিয়েছেন এখানে।
একই কথা জানিয়েছেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত সমরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যও। তাঁদের কথায়, এখানে রাজনীতিবিদেরা অনেক বারই এসেছেন। এ বার মুখ্যমন্ত্রী এলে সম্প্রীতির বার্তা প্রচারে সম্ভাবনা বাড়বে।