৩ কাণ্ডে ভাঙচুর, বোমা, গুলিও

পঞ্চানন বর্মার জন্মভিটে খলিসামারি গ্রামে এ দিন সকাল থেকে গোলমাল শুরু হয়। দীর্ঘদিন এই এলাকায় ঢুকতে পারছিল না তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

দিনহাটা, শীতলখুচি শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৫৩
Share:

ভাঙচুর: এমনই দশা শীতলখুচিতে বিজেপি পার্টি অফিসের। নিজস্ব চিত্র

বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে গোলমাল চলছেই। গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কখনও দিনহাটা শহরে, কখনও দিনহাটার পেটলায়, আবার কখনও শীতলখুচির খলিসামারিতে দু’পক্ষের সংঘর্ষে বোমা-গুলি চলার অভিযোগ উঠেছে। কোথাও পুলিশকে লক্ষ করেই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। রবিবার রাত থেকে সোমবার সারাদিন ধরে এই তিন ঘটনায় সব মিলিয়ে ৬ জন জখম হয়েছেন বলে খবর।

Advertisement

পঞ্চানন বর্মার জন্মভিটে খলিসামারি গ্রামে এ দিন সকাল থেকে গোলমাল শুরু হয়। দীর্ঘদিন এই এলাকায় ঢুকতে পারছিল না তৃণমূল। তাদের পার্টি অফিসও বন্ধ ছিল। এ দিন সকালে তারা সেই পার্টি অফিস খুলতে যায় বলে দাবি করা হয়েছে দলের তরফে। তৃণমূলের আরও দাবি, সেই সময়ে তাদের পথ আটকায় বিজেপির লোকজন। তখনই সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, দু’পক্ষের মারামারির সময়ে বোমা-গুলি চলে। দু’পক্ষ মিলিয়ে ৫ জন জখম হন। এর মধ্যে বিজেপির হিতেন বর্মণ নামে এক কর্মীর অবস্থা গুরুতর। এলাকার লোকজনের দাবি, তৃণমূল তাদের বন্ধ থাকা পার্টি অফিস খুলে দেয়।

Advertisement

উল্টো দিকে বিজেপির দাবি, তৃণমূলের ‘হার্মাদরা’ তাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করে, প্রধানমন্ত্রীর ছবি মাটিতে ফেলে দেয় এবং পতাকা খুলে ফেলে। একই সঙ্গে এলাকার ২০টি বাড়িতে তৃণমূল ভাঙচুর ও লুঠপাট চালায় বলেও বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য হেমচন্দ্র বর্মণের দাবি। তৃণমূল অবশ্য এই দাবি অস্বীকার করেছে। জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে যাবেন, তাতে বিজেপির আপত্তি কেন? এতদিন সেই অফিসটি বন্ধ করে রেখেছিল বিজেপি। এটা স্বৈরাচারী চরিত্র।’’

দিনহাটা শহর এবং পেটলাতেও দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়েছে রবিবার রাতে। নাজিরহাটের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই দিনহাটা শহরে ডাকবাংলো পাড়ায় বিজেপির মহকুমা অফিসটি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও বিজেপির পতাকা ফেলে দেওয়ার অভিযোগও এনেছে বিজেপি। তাদের দাবি, তাদের এই অফিসটি এর আগে একাধিকবার আক্রান্ত হয়েছে। বিজেপির সূত্রে দাবি, বছরখানেক আগেও তৃণমূলের দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বুলডোজার দিয়ে অফিসটি ভাঙার নির্দেশ দেন। উদয়ন অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘বিজেপির দলীয় কোন্দলে ওদের অফিস ভাঙচুর হয়েছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

দিনহাটার এসডিপিও মানবেন্দ্র দাস বলেন, ‘‘বিজেপির এই কার্যালয়টি ভাঙচুরের ঘটনার তদন্ত চলছে।’’

রবিবার রাতেই দিনহাটার পেটলা বাজারে বিজেপির এক কর্মী আক্রান্ত হওয়ার পরে পাল্টা হামলায় ১৭টি দোকানে ভাঙচুর করা হয় বলে দাবি। তখন হামলাকারীদের মোকাবিলা করতে গিয়ে জখম হন এক ব্যবসায়ী। বিজেপি অবশ্য জানিয়েছে, এর সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এলাকার ব্যবসায়ীরা পুরো ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, রাজনৈতিক সংঘর্ষের ধাক্কা তাঁদের গায়ে লাগবে কেন? পেটলা বাজারে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে রাজনৈতিক হামলায় বাজারের দোকানপাটে আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ করা হয়েছে। দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, ‘‘অবিলম্বে হাট-বাজারে রাজনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধ না হলে ব্যবসায়ীরা জেলা জুড়ে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন