ঘুষ দাবি, ক্ষুব্ধ বন্দি

খবর পেয়ে জেলা পুলিশের কর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে কয়েক জন বিচারাধীন বন্দি লোহার শিকে মাথা ঠুকে ঘুষ নেওয়ার প্রতিবাদও জানান৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশ কর্তারা গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগকে ঘিরে শনিবার দুপুরে উত্তেজনা ছড়াল জলপাইগুড়ি আদালত চত্বরের হাজতে৷ সেখানে কর্তব্যরত দুই পুলিশ কর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারাধীন বন্দিরা৷ খবর পেয়ে জেলা পুলিশের কর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে কয়েক জন বিচারাধীন বন্দি লোহার শিকে মাথা ঠুকে ঘুষ নেওয়ার প্রতিবাদও জানান৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশ কর্তারা গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়৷

Advertisement

বিক্ষোভকারী ওই বিচারাধীন বন্দিদের অভিযোগ, জলপাইগুড়ির কোর্ট হাজতে প্রতিদিন বিচারের জন্য আনা বন্দিদের জল খাওয়া থেকে শুরু করে পরিজনদের সঙ্গে একটু কথা বলা—সবটাই নির্ভর করে সেখানে ডিউটিতে থাকা পুলিশ কর্মীদের ঘুষ দেওয়ার ওপর৷ এক বন্দির অভিযোগ, ‘‘বাড়ির কেউ আমাদের জল দিতে গেলে একশ টাকা ঘুষ দিতে হয়৷ খাবার দিতে গেলে দুশো টাকা৷ পরিজনরা কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও দু’শো থেকে তিনশো টাকা চাওয়া হয়৷ আর হাজতের দু’টি ঘরের বাইরে কেউ থাকতে চাইলে পাঁচশো টাকা ঘুষ দিতে হয়৷’’

বিচারাধীন বন্দিদের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই এই নিয়ম জলপাইগুড়ি আদালতের হাজতে চলে আসছে৷ কোর্ট হাজতে থাকা সঞ্জয় রায় নামের এক বিচারাধীন বন্দির ভাই সুদীপ্ত রায়ের অভিযোগ, ‘‘এ দিন দাদাকে একটা কথা বলতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মী তার জন্য টাকা চান৷ আমি প্রতিবাদ করলে ওই পুলিশ কর্মী আমায় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন৷’’ সূত্রের খবর, এর পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কোর্ট হাজতে থাকা বিচারাধীন বন্দিরা৷ শুরু হয় দুই পুলিশ কর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ৷ আদালতের কয়েক জন কর্মী তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন৷ বন্দিদের অভিযোগ সমর্থনই করে হাজতের বাইরে তত ক্ষণে চিৎকার জুড়ে দেন তাঁদের পরিজনেরা৷ ফলে রীতিমত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সেখানে৷ কয়েক জন বিচারাধীন বন্দি কোর্ট হাজতের ভেতরে কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে রাখা টাকা দেখিয়ে সেগুলি ঘুষের টাকা বলে অভিযোগ করতে থাকেন৷

Advertisement

পরিস্থিতি সামলাতে ডিএসপি (সদর) মানবেন্দ্র দাস ও কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী সেখানে যায়৷ কোর্ট হাজতের বাইরে থাকা ভিড় সরিয়ে দিলেও ভেতরে বিচারাধীন বন্দিদের বিক্ষোভ চলতেই থাকে৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশ কর্তারা তাদের অভিযোগ শুনে গোটা ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়৷

কোর্ট হাজতে কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মী দুলাল রায় বলেন, ‘‘কোর্ট হাজতে আসার পরই অনেক বিচারাধীন বন্দি নেশার জিনিস চায়৷ এ দিনও কয়েক জন তাঁদের পরিজনদের থেকে তা চেয়েছিলেন৷ আমরা বাধা দেওয়ায় ওঁরা মিথ্যা অভিযোগ তুলে এ সব করছেন৷’’ ডিএসপি মানবেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘কোতোয়ালি থানাকে গোটা ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন