পুলিশের কাছে ক্ষুব্ধ টিএমসিপি

পুলিশ সূত্রের খবর, কোচবিহার শহরে কলেজের কর্তৃত্ব নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের দুটি গোষ্ঠীর একটি তৃণমূল নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিকের অনুগামী বলে পরিচিত। রাহুল, সায়নদীপবাবু ওই গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত। অন্য গোষ্ঠী দলের কাউন্সিলর শুভজিৎ কুণ্ডুর অনুগামী বলে পরিচিত। শুভজিৎ অবশ্য পুরসভার একটি আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় ফেরার রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৮ ১০:০০
Share:

ক্ষোভ: অবস্থানে টিএমসিপি। নিজস্ব চিত্র

সংগঠনের নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলনে নামল টিএমসিপির কর্মী-সমর্থকরা। শনিবার দুপুরে কোচবিহার শহরে মিছিল করেন তাঁরা। পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভও দেখানো হয়। সেখানে তাঁরা জানিয়ে দেন, গুলিবিদ্ধ মজিদ আনসারি শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন থাকলেও বিপদ কাটেনি। শুক্রবার রাতে তাঁর অস্ত্রোপচারও করা হয়েছে।

Advertisement

আন্দোলনকারীদের তরফে টিএমসিপির রাজ্য সহ সভাপতি রাহুল রায় বলেন, “এখনও পর্যন্ত দোষীরা কেউ ধরা পড়েনি কেন সেটাই জানতে চেয়েছি।” টিএমসিপির জেলা কার্যকরী সভাপতি সায়নদীপ গোস্বামী বলেন, “মজিদের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তিনি এখনও সঙ্কটাপন্ন। দোষীরা গ্রেফতার না হলে উদ্বেগ কমবে না।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজ হচ্ছে। কি ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল তা নিয়েও নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। পুলিশের এক কর্তার কথায়, ঘটনাস্থল থেকে গুলির কোল মিলেছে। সেই নমুনা, আঘাতের ধরন সব কিছু দেখা হচ্ছে। ফরেন্সিক পরীক্ষাও হবে।

Advertisement

প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, পাইপগান থেকে গুলি করা হয়নি। ওয়ান শটারের সম্ভাবনাও কম। সেভেন পয়েন্ট সিক্স বা অন্য কোনও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে। তবে সব কিছু খতিয়ে দেখেই পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে। ঘটনায় কী ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে সে ব্যাপারে পুরো নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

তৃণমূলের অন্দরেই অভিযোগ, অভিযুক্তদের মদত দেন মুন্না খান নামে শহরের বাসিন্দা স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। পুলিশের কাছে ওই অভিযোগ জানান গুলিতে জখম ওই ছাত্রের দাদা। মুন্না বলেন, “কলেজের বাইরে এক ছাত্রের উপর আক্রমণ হয়েছে। কারা যুক্ত তা যথোপযুক্ত তদন্ত করে বের করতে হবে। দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এখানে আমার নাম একেবারেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানো হচ্ছে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, কোচবিহার শহরে কলেজের কর্তৃত্ব নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের দুটি গোষ্ঠীর একটি তৃণমূল নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিকের অনুগামী বলে পরিচিত। রাহুল, সায়নদীপবাবু ওই গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত। অন্য গোষ্ঠী দলের কাউন্সিলর শুভজিৎ কুণ্ডুর অনুগামী বলে পরিচিত। শুভজিৎ অবশ্য পুরসভার একটি আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় ফেরার রয়েছেন। অভিযোগ, শুক্রবার ওই বহিরাগতরা কলেজে ঢোকার চেষ্টা করেন। বাদানুবাদ থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ গিয়ে অবস্থা সামলায়। বাড়ি ফেরার সময় রাস্তায় কলেজের ছাত্র মজিদকে গুলি করা হয়। তিনি ওই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। টিএমসিপি ইউনিট কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বেও রয়েছেন।

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি সাবির সাহা চৌধুরী বলেন, “ছাত্রের ওপর গুলিচালনা দুঃখজনক। তবে যতদূর শুনেছি রাজনীতির ব্যাপার নেই। পুলিশ তদন্ত করছে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি আবদুল জলিল আহমেদও বলেন, “ওই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও বিষয় নেই। পুলিশকে বিষয়টি দেখছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন