অভাব উড়িয়েই কৃতিত্ব

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পোড়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা রায় পরিবার। মা মিতা রায় জানাচ্ছেন পড়াশোনায় বরাবরই ভাল মধুরিমা।

Advertisement

অর্জুন ভট্টাচার্য

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ১৪:৪৮
Share:

কৃতি: মধুরিমা রায়

আর্থিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। টানাটানির সংসারের মধ্যেই যে ভাবেই হোক পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন মধুরিমা। মেয়েকে পড়ানোর জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করে গিয়েছেন জিতেন রায় আর মিতা রায়। পেশায় দর্জি জিতেনবাবুর আয়েই চলে সংসার। যাবতীয় খরচা সামলে দুই মেয়েকেই পড়াচ্ছেন রায় দম্পতি। বড় মেয়ে মধুরিমা এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন, পেয়েছেন ৪৭০।

Advertisement

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পোড়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা রায় পরিবার। মা মিতা রায় জানাচ্ছেন পড়াশোনায় বরাবরই ভাল মধুরিমা। জলপাইগুড়ি সুনীতিবালা সদর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী মধুরিমা মাধ্যমিকে ৬৬৬ পেয়েছিলেন। গৃহশিক্ষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেয়ের রেজাল্ট দেখিয়ে মেয়েকে পড়ানোর অনুরোধ জানাতেন মা মিতা রায়। কখনও বাবা, কখনও বা মা সাইকেল চালিয়ে মধুরিমাকে শহরে পড়াতে নিয়ে আসতেন। বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ সাইকেলে মেয়েকে বসিয়ে স্কুলেও পৌঁছে দিয়েছেন মা।

মধুরিমার কথায়, ‘‘মাধ্যমিকের ফল জেনে দুই-একটি সংস্থার তরফে আর্থিক সাহায্য পেয়েছিলাম। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও অন্য শিক্ষিকাদের অবদান কখনও ভুলতে পারবো না।’’ উচ্চমাধ্যমিকে বাংলায় ৯২, ইংরেজিতে ৯৬, বায়োলজিতে ৮৮, পদার্থবিদ্যায় ৯৭ এবং রসায়নে ৯৭ পেয়েছেন মধুরিমা। পড়াশোনার পাশাপাশি ঝোঁক রয়েছে আঁকাতেও। ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন দেখেন মধুরিমা। সেটা না হলে পড়তে চান কৃষি বিজ্ঞান।

Advertisement

জিতেন রায় বলেন, ‘‘সামান্য দর্জির দোকান চালিয়ে দুই মেয়েকে লেখাপড়া শেখানো খুবই কঠিন। তবুও চেষ্টা চালাচ্ছি।’’ মা মিতা রায় বলেন, ‘‘সরকার বা কোনও সহৃদয় ব্যাক্তি বা সংস্থা যদি সাহায্য করতে পারেন তাহলে আমার মধুরিমার পড়াশোনার ইচ্ছে পূরণ হবে।’’

মধুরিমার বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুনীপা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওর উচ্চশিক্ষার জন্যেও আমরা সাধ্যমতো সহযোগিতা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন