পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি
Joint Entrance Examination

রাতে পৌঁছে ভোরে রওনা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৬:৪৬
Share:

ফাইল চিত্র।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই মঙ্গলবার থেকে জেইই মেন পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল। তার উপর পরীক্ষার আগের দিন ছিল লকডাউন। এই পরিস্থিতির মধ্যে অর্ধেকের বেশি ভিন জেলার পড়ুয়াই পরীক্ষা দিতে আসতে পারেননি বলে দাবি। যাঁরা এসেছেন উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো থেকে শিলিগুড়িতে পরীক্ষা দিতে, তাঁদের এবং অভিভাবকদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলেও অভিযোগ।

Advertisement

সোমবার লকডাউন থাকায় অনেকে রবিবারই শিলিগুড়িতে চলে এসে হোটেল বা আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছেন। ইটাহার থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছে নবজ্যোতি বর্মণ। ১০ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে ছেলেকে পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসেছেন মা আল্পনা বর্মণ। সকলের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তার উপর মাস্ক, গ্লাভস পরে পরীক্ষা দিতে প্রভূত সমস্যায় পড়তে হয় পড়ুয়াদের।

উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির পরীক্ষার্থীদের জন্য দাগাপুরে সুরেন্দ্র ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছিল।

Advertisement

মালদহের পরীক্ষার্থীদের একাংশ কলকাতায় যেতে হয়েছে পরীক্ষা দিতে। শিলিগুড়ির ওই কেন্দ্রে এদিন প্রথম ধাপে ২০৮ এবং দ্বিতীয় ধাপে ২৫৭ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়ার কথা। পরীক্ষা কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রথম ধাপে ৮০ জন এবং দ্বিতীয় ধাপেও অনেকে অনুপস্থিত ছিলেন।

নবজ্যোতির কথায়, ‘‘আমার ঘরে ২১ জনের মধ্যে ৮ জন পরীক্ষার্থী এসেছিলেন। মাস্ক দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। তবে গ্লাভস ছিল না। মাস্ক পরে এ ভাবে পরীক্ষা দিতে কিছুটা সমস্যা তো হয়েইছে।’’ অনেকে গ্লাভস এনেছিলেন। তা পরে পরীক্ষা দিয়েছেন। নিউ কোচবিহারের বাসিন্দা তৃণাঞ্জনকুমার সাহা বলেন, ‘‘গ্লাভস পরে পরীক্ষা দিতে হবে ভেবে আগে থেকে অভ্যেসও করেছি। তবে অসুবিধা তো হয়েছেই।’’

ডুয়ার্সের ক্রান্তির বাসিন্দা কাঞ্চন সরকার এ দিন ৮৫ কিমি পার হয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন বেলা ৩টের স্লটে। তাঁকে নিয়ে তাঁর বাবা দীনেশবাবু সকাল ন’টায় স্কুটিতে করে বার হয়েছিলেন। দীনেশের কথায়, ‘‘এই পরিস্থিতিতে বাসে চাপতে ভরসা পাইনি।’’

এ দিনই তাঁরা একই ভাবে ফিরে গেলেন। বাড়ি পৌঁছতে রাত দশটা। জানিয়ে গেলেন, ‘‘বুধবার বেলা ৯টায় পরীক্ষা। তাই ভোর রাতেই বার হতে হবে।’’

রায়গঞ্জ থেকে এসেছেন প্রিয়জিৎ ঘোষ। উঠেছেন আত্মীয়ের বাড়িতে। গঙ্গারামপুরের জ্যোতির্ময় রায় ও তাঁর বন্ধু বিক্রম সরকারও উঠেছেন আত্মীয়ের বাড়ি। বিক্রমরা বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতির মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই পরীক্ষা দিতে আসতে হল। অনেকে আসতে পারেননি।’’

কোচবিহার থেকে চার হাজার টাকা খরচ করে গাড়ি ভাড়া নিয়ে এসেছেন অর্চিতা দত্ত। তাঁর মা প্রতীমা দেবীও বলেন, ‘‘আরও কিছু দিন পরে পরীক্ষা হলে ভাল হত।’’ অনেকে আবার বলছেন, পরীক্ষা হয়ে গিয়ে ভালই হল।

পরীক্ষা থাকায় এদিন এনবিএসটিসি কয়েকটি রুটে অতিরিক্ত বাস দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিএসটিসির এক কর্তা বলেন, ‘‘আমার ছেলেও পরীক্ষা দিচ্ছে। দুই বন্ধু মিলে গাড়ি নিয়েই যাতায়াত করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন