অকুস্থল: রান্নাঘরে পড়ে রয়েছে এঁটো বাসন। নিজস্ব চিত্র
সারারাত জেগে থাকা। তার উপর মশার কামড় খেয়ে তালা ভাঙার কসরত। খালি পেটে এসব কি সয়! চোরেরও সয়নি। তাই ঘরে ঢুকে মুরগির মাংস আর ভাত দেখে নিজেকে সামলাতে পারেনি চোর। ধীরেসুস্থে খেয়েদেয়ে তারপরে চুরি করে ধাঁ। দু’টো গ্যাস সিলিন্ডার আর বাকি বাসনপত্র নিলেও এঁটো বাসনটা অবশ্য আর নেয়নি, সেটা রাখা ছিল রান্নাঘরেই। মঙ্গলবার ভোরে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার আশিঘর ফাঁড়ির হাতিয়াডাঙার ঘটনা।
সকালে উঠে চুরির ঘটনা টের পান বাড়ির লোকেরা। হাঁকডাকে জড়ো হয়ে যান পড়শিরাও। তারপরে চোরের কাণ্ড টের পেয়ে হাসির রোল পড়ে এলাকায়। যদিও যার বাড়িতে চুরি হয়েছে, সেই নির্মল মজুমদারের মুখ ছিল গোমড়াই। তিনি বলেন, ‘‘তা না হয় খেয়েছে। কিন্তু পুজোর আগে দু’টো সিলিন্ডারই নিয়ে গেল যে। রান্না হবে কী ভাবে? এখন আবার গ্যাস এজেন্সির অফিসে দৌড়তে হবে।’’
হাতিয়াডাঙায় টিনের একচালা বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন নির্মল মজুমদার। শান্তিনগর বৌবাজারে মাংসের দোকান রয়েছে তাঁর। নির্মলবাবু, স্ত্রী অঞ্জলী দেবী, মেয়ে দীপিকা ছাড়াও বাড়িতে তাঁদের আরও আত্মীয় থাকেন। বাড়িতে ঢুকেই বারান্দা, তার এক পাশে রয়েছে রান্নাঘরটি। দীপিকা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে আমরা ১টা অবধি জেগে ছিলাম। সকালে উঠে দেখে এই কাণ্ড। রান্নাঘরের লোহার শেকল ভেঙে চোর ভিতরে ঢুকেছিল বলে মনে হচ্ছে।’’ নির্মলবাবুর স্ত্রী অঞ্জলিদেবীর সন্দেহ চুরি হয়েছে ভোরের দিকেই। তিনি বলেন, ‘‘ভোরের দিকে দরজায় একটা আওয়াজ শুনেছিলাম। অত পাত্তা দিইনি। চোরটা ভাত বেশি খায়নি। তবে বাটিশুদ্ধ মাংস খালি করেছে।’’
এ দিন সকালে নির্মলবাবুরা আশিঘর ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘স্থানীয় কেউ এমন করতে পারে বলে মনে হচ্ছে।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুজোর আগে এলাকায় উপদ্রব বেড়েছে ছিঁচকে চোরের। ক’দিন আগে আর একটি বাড়িতেও চুরি হয়েছিল বলে তাঁরা জানাচ্ছেন।