অভিযুক্ত: নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃতদের। নিজস্ব চিত্র
কোমরের বেল্টে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল সোনার বাট আর সোনার বিস্কুট। ছক ছিল রাতের পদাতিক এক্সপ্রেসে পাচার করে দেওয়া হবে সেই সোনা। কিন্তু শেষপর্যন্ত ভেস্তে গেল সেই ছক। শুক্রবার রাতে এনজেপি স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেসের দ্বিতীয় শ্রেণির কামরা থেকে সেই সোনা উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের (ডিএরআই) আধিকারিকরা। গ্রেফতার হয়েছে তিনজন।
উদ্ধার হওয়া সোনার ওজন ৩ কেজি ৬৫৮ গ্রাম। আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম প্রায় ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা বলে ডিআরআই-র অফিসারেরা জানিয়েছেন। শনিবার দুপুরে ধৃতদের আদালতে তোলা হলে তাদের তিনদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ধৃতদের নাম নীতিশ দেবনাথ, রূপম সেন এবং প্রদীপ দেবনাথ। নীতিশ কোচবিহারের নাটাবাড়ি, রূপম পুন্ডিবাড়ি এবং প্রদীপ বাবুরহাটের বাসিন্দা। এরা সকলেই সোনা পাচার চক্রের সদস্য, নিজেরাও সোনা লেনদেনের ব্যবসায় জড়িত বলে আধিকারিকরা জানান। ধৃতদের থেকে নিউ কোচবিহার স্টেশন থেকে শিয়ালদহ যাওয়ার পদাতিক এক্সপ্রেসের টিকিট উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, বেল্টের পিছনে লুকনো খাপ ছিল, সেখানে খবরের কাগজে মুড়ে সেলোটেপ দিয়ে আটকে সোনাগুলো রাখা ছিল। ডিআরআই-র আইনজীবী রতন বণিক বলেন, ‘‘মায়ানমার থেকে সোনা এসেছে। কলকাতার বিবি গঙ্গোপাধ্যায় স্ট্রিটের কয়েকজনের নাম মিলেছে।’’ ডিআরআই অফিসারেরা জানান, ধৃতদের কাছে কয়েকদিন আগেই উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে সোনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই শিলিগুড়ি করিডরকে ব্যবহার করে সোনা পাচারের চক্র সক্রিয় রয়েছে। মায়ানমার থেকে আনা সোনা উত্তর-পূর্বাঞ্চল হয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছয়। সেখান থেকে কলকাতা, মুম্বই বা দিল্লিতে পাচার করা হয় চোরাই সোনা। ২০১৫-র অগস্টে নেপাল সীমান্ত এলাকা থেকে ২ কেজি সোনার বার উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় এক নেপালি বাসিন্দাকে ধরা হয়েছিল। পরের বছরের এপ্রিলেই ঘোষপুকুর এলাকা থেকে এক নেপালি বাসিন্দা-সহ ৩ জনকে ধরা হয়। উদ্ধার হয় প্রায় ৩৫ কেজি সোনা। যার মূল্য ছিল প্রায় ১১ কোটি টাকা। ২০১৭-র নভেম্বরেও শিলিগুড়িতে ধরা পড়েছিল মহারাষ্ট্রের তিন সোনা পাচারকারী।