হারের পর্যালোচনা নিয়ে ডাকা বৈঠকে দলেরই বিক্ষুব্ধদের হাতে আক্রান্ত হলেন মালদহের কালিয়াচকের মোথাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মহম্মদ নজরুল ইসলাম। নজরুল ছাড়াও তাতে আহত হয়েছেন আরও চার তৃণমূল নেতা-কর্মী। এমনকি তাঁর গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মোথাবাড়ির পূর্ত দফতর সংলগ্ন একটি মাঠে। পরে পুলিশ ও দলীয় কর্মীদের একাংশ উদ্ধার করে নিয়ে যায় নজরুল সহ অন্যান্যদের। আহতেরা প্রত্যেকেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন বাঙিটোলা গ্রামীণ হাসপাতালে। এদিনের হামলা নিয়ে আহতেরা প্রত্যেকেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন। মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘একটা গোলমাল হয়েছিল। পুলিশ গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। এখনও কোন লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার মোথাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে বাম কংগ্রেস জোট প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিনের কাছে প্রায় ৩০ হাজার ভোটে হার হয় তৃণমূল প্রার্থী মহম্মদ নজরুল ইসলামের। প্রার্থী নিয়ে দলের একাংশ ক্ষুব্ধই ছিল। হারের পর নজরুলবাবু দাবি করেন, দলেরই একাংশের অন্তর্ঘাতে এমন ফল হয়েছে। এদিন বিকেলে মোথাবাড়িতে পূর্ত দফতর সংলগ্ন একটি মাঠে দলীয় ব্লক স্তরের নেতাদের নিয়ে হারের পর্যালোচনার জন্য বৈঠক ডাকা হয়। সেই বৈঠকে প্রার্থী নজরুল সহ ব্লক সভাপতি জিরাতুল আলি এবং একাধিক নেতাকর্মী হাজির ছিলেন। সেই বৈঠকে দলেরই একাংশ অন্তর্ঘাত করেছে বলে ফের অভিযোগ তোলেন নজরুল। তখনই ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাবু চৌধুরী। তিনি প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। নজরুলের অনুগামীরা প্রতিবাদ করলে শুরু হয়ে যায় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি। ওই কেন্দ্রের প্রার্থী নজরুলকে মারধর করা হয় এবং তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়।
একই সঙ্গে উত্তর লক্ষ্মীপুরের কার্যকরী সভাপতি বানিজ উদ্দিন আহম্মেদ সহ সুমন প্রমাণিক, নুরুল ইসলাম, তেনু শেখদের মারধর করা হয়। নজরুলের অভিযোগ, ‘‘দলেরই একাংশ বিরোধীদের হয়ে ভোটে কাজ করেছেন। আর এ দিনের বৈঠকে আবার তাঁরা হাজির হন। আমরা পর্যালোচনা করার সময় বৈঠক ভেস্তে দিতে বাবু চৌধুরী এবং তাঁর দলবল আমাদের উপরে হামলা চালায়। আমার গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। দলীয় কর্মীদের হস্তক্ষেপে আমরা কোন রকমে রেহাই পাই।’’ ব্লক সভাপতি জিয়াতুল আলি বলেন, ‘‘আমাদের প্রার্থী এবং কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে দলেরই কিছু কর্মী। তারা কোনও পদে নেই। আমরা জেলা নেতৃত্বদের পুরো বিষয়টি জানিয়েছি।’’ যদিও হামলার অভিযোগ অশ্বীকার করেছেন বাবু চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘কোনও মারধরের সঙ্গে আমি যুক্ত নই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।’’