মেয়রের পদত্যাগের দাবিতে আজ শুক্রবার থেকে অবস্থান-ঘেরাও শুরু করছে তৃণমূল। শিলিগুড়িতে যত্রতত্র জঞ্জাল জমে থাকা এবং ডেঙ্গির রুখতে ব্যর্থতার অভিযোগে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছে তৃণমূল। শহরের পাঁচটি বোরো অফিসের সামনে অবস্থান হবে। আগামী ১০ জানুয়ারি পুরভবন ঘেরাও করবে তৃণমূল। সে দিন পুরসভার আর্থিক বরাদ্দ নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে তৃণমূল। রাজ্য সরকার এত দিন পর্যন্ত শিলিগুড়ি পুরসভাকে কোন খাতে কত টাকা দিয়েছে তার বিস্তারিত খতিয়ান শ্বেতপত্রে থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
মেয়রের পদত্যাগের দাবিতে টানা আন্দোলন চালাতে কমিটিও গড়েছে তৃণমূল। দলের সব কাউন্সিলর সহ শাখা সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের কমিটিতে রাখা হয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদ গত বছর ভোটে দু’টিই দখল করেছে বামেরা। বামেদের হাতে থাকা দুই বোর্ডের দখলই দ্রুত তাদের হাতে আসবে বলে গত অগস্ট মাসে দাবি করেছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। কিছুদিন পরে দলেরই আরেক সভায় গৌতমবাবু ঘোষণা করেছিলেন, দুর্গাপুজোর পরে বাম পুরবোর্ডেরও বিসর্জন হবে। পুজোর পরে নতুন বছরের শুরুর মুখে মেয়রের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করায় কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বামেরা। বাম নেতাদের দাবি, বিসর্জন সম্ভব নয় বুঝেই পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের কথা শোনা যাচ্ছে। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল কাউন্সিলর তথা আন্দোলন কর্মসূচির আহ্বায়ক কৃষ্ণ পাল বলেন, ‘‘বামেদের এক কাউন্সিলর আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। সুতরাং বিসর্জনের বাজনা শুরু হয়েই গিয়েছে। শহরের বাসিন্দারা চাইছে এই বোর্ড সরে যাক এবং মেয়র পদত্যাগ করুন।’’
অন্যদিকে বামেদের দাবি ভয়-প্রলোভন দেখিয়েও একজনের বেশি কাউন্সিলরকে দলে টানতে পারেনি তৃণমূল। সে কারণেই আপাতত বোর্ড দখলের আশা ছেড়ে রাজনৈতিক চাপ বাড়াতে চাইছে তারা। ইতিমধ্যে বামেদের তরফে পুরসভার বকেয়া থাকা পাওনার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিরোধীদের বোর্ড বলেই রাজ্য সরকার শিলিগুড়ি পুরসভাকে বঞ্চনা করে চলেছে বলে লাগাতার অভিযোগ করে চলেছেন মেয়র অশোকবাবু। তারই পাল্টা তৃণমূলের বরাদ্দের তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত। যদিও অশোকবাবু বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিরোধের জেরে হুমকি দিয়েও অগণতান্ত্রিক ভাবে বোর্ড দখল করতে পারেনি তৃণমূল। কোনও আন্দোলন নিয়েই আমরা বিচলিত নই। রাজ্যের বঞ্চনার প্রতিবাদে আগামী মাস থেকে আমাদেরও টানা আন্দোলন কর্মসূচি রয়েছে।’’